‘চাল-গুঁড়া, ডাল–বাটা, গুড়, নারকেল ইত্যাদির মিশ্রণে কৃত মিষ্টান্ন বিশেষ’—হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’–এ পিঠার এমন সংজ্ঞা পাওয়া যায়। পিঠা এমন একটি খাবার, যা এ দেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে পরিচিত। হয়তো বেশির ভাগেরই প্রিয়, অন্তত এই শীতকালে। বছরজুড়েই আসলে পিঠা বানানো বা খাওয়ার চল আছে। তবে এই শীতকালে পিঠার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। কারণটা অনেকটাই প্রাকৃতিক। শীতকালে আবহাওয়ার কারণেই গরম পিঠা উপাদেয় হয়ে ওঠে। কিন্তু সব পিঠা তো আর গরম নয়। তাহলে?
গ্রাম ও কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশে পিঠা এই শীতকালে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার আরেকটি কারণ এ সময় নতুন ফসলের আগমন। একটা সময় ছিল, যখন অগ্রহায়ণ মাসে ওঠা আমনই ছিল প্রধান ফসল। এখন অন্য সময়েও ধান হয়। কিন্তু ‘অঘ্রানের ভরা খেত’ থেকে উঠে আসা ফসলের (আসলে ধানের) সঙ্গে এ দেশের মানুষের নাড়ির টান। পিঠার সঙ্গেও নয় কি? হ্যাঁ, তা–ও বলা যায়। শুধু নতুন ধানের জন্য নয়, পিঠার অনুষঙ্গ যে খেজুরের গুড়, খেজুরের রস কিংবা মিষ্টি আলু—এসবই এই শীতের সময় মেলে প্রচুর পরিমাণে। মিষ্টি আলু পুলি পিঠার পুর তৈরি করতে লাগে। এর ভেতরে থাকা নারকেলের ক্ষীর তৈরি করা হয় সাধারণত খেজুরের গুড় দিয়ে।
কত রকমের যে পিঠা আছে, তা গুনে শেষ করা দায়। তবে খুব পরিচিত পিঠার মধ্যে আছে চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, ভাপা, নকশি পিঠা, পুলি (দুধ বা রস), গোকূল পিঠা।
সংস্কৃত ‘পিষ্টক’ শব্দ থেকে পিঠা শব্দের উৎপত্তি। এটি বিশেষ্য। এর প্রাকৃত ‘পিঠ্ঠহ’ থেকে বাংলায় পিঠ্ঠা, এর থেকে ‘পিঠা’ শব্দটি এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সম্মানীয় অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, প্রাচীন গ্রন্থ বেদে পিঠার প্রতিশব্দ আছে ‘অপূপ’। আবার বেদে ‘পুরোডাশ’ শব্দটি পাওয়া যায়। গম ও যব চূর্ণ করে যজ্ঞের জন্য তৈরি প্রসাদই ছিল এই পুরোডাশ।
মধ্যযুগের (১৫০০ থেকে ১৫৫১ খ্রিষ্টাব্দ) বাঙালি কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী (কবি কঙ্কনচণ্ডী নামেও পরিচিত) কাব্যে ‘পিঠারি’ শব্দ পাওয়া যায়। পিঠারি শব্দের অর্থ হলো যারা পিঠা বানায়—এমন কোনো পেশাজীবী শ্রেণি।
বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের (১৫০৭–১৫৮৯) গ্রন্থ ‘চৈতন্য ভাগবত’–এ ‘পিঠা পানা’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। পানা অর্থ পানীয়। কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর (জন্ম: ১৪৯৬, মৃত্যুর তারিখ অজানা) চৈতন্যচরিতামৃতেও পিঠা শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়।
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তর কাব্যেও পিঠাপুলি শব্দের সন্ধান পাওয়া যায়।
জাতি-ধর্মনির্বিশেষে পিঠার কদর ভিন্ন। তবে এ দেশের অনেক ধর্মের অনুষ্ঠানে পিঠা গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে স্থান পেয়েছে। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের পৌষসংক্রান্তি অনুষ্ঠানের (পৌষ মাসের শেষ দিন) বড় অংশজুড়ে থাকে পিঠা বানানোর বিষয়টি। শহরে এমনটা দেখা না গেলেও গ্রামীণ হিন্দুসমাজে সংক্রান্তির আয়োজন এবং সেই সঙ্গে পিঠা বানানোর চল রয়ে গেছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে বিভিন্ন এলাকায় সংক্রান্তির দিন ভোরে শিশু–কিশোরেরা গরু ধাওয়া করে। এরপর জলাশয়ে স্নান সেরে পিঠার আয়োজনে শরিক হন পরিবারের সদস্যরা। এই শীতের মধ্যে ২৫ ডিসেম্বর খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন উৎসব। বড়দিনে কেকের চল রয়েছে। আর গ্রামের খ্রিষ্টানসমাজে পিঠাপুলির আয়োজন চলে বড়দিনের উৎসবে।
দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ নানা ধরনের পিঠা বানায়। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর আছে বাহারি পিঠা। বাঙালিদের মতোই পাহাড়িদের পিঠার উপাদানের মধ্যে চাল ও নারকেলের প্রাধান্য দেখা যায়। জুমের খেতের বিন্নি চালের পিঠার খ্যাতি আছে।
গ্রামাঞ্চলে তো বটেই, শহরে এই রাজধানীতেও শীত এলে পিঠার পসরা নিয়ে বসে পড়েন অনেকেই। নভেম্বর মাসের মোটামুটি অর্ধেকটা পেরোলেই রাজধানীর পথেঘাটে পিঠার দোকান গজিয়ে ওঠে। রাস্তার পাশের এসব দোকান তো আছেই; নগরের অভিজাত প্রতিষ্ঠান, রেস্তোরাঁতেও পিঠার রমরমা এখন। খোদ পিঠা বিক্রি করতেই এসব রেস্তোরাঁ বিশেষ ব্যবস্থা রাখে। রাজধানীসহ কয়েকটি মহানগরে নানা ধরনের পিঠার সন্ধান দিতেই এই আয়োজন।
৫৬/৪ লেক সার্কাস, কলাবাগান, পশ্চিম পান্থপথ (স্কয়ার হাসপাতালের পশ্চিমে), ঢাকা।
বিশেষ আয়োজন: অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিন থেকে পিঠা-পায়েস উৎসব শুরু হয়েছে মাদল খাবারঘরে। চলবে মাঘ মাস পর্যন্ত। এই উৎসবে পিঠা-পায়েস তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয় নিজস্ব চাল, নিজেদের তৈরি খেজুরের গুড় আর নিজেদের খামারের গরুর দুধ।
কখন পাওয়া যায়: এখানে প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে ভাপা পিঠা তৈরি শুরু হয়। সঙ্গে থাকে চিতই পিঠা। তবে ছুটির দিনে সকালেও তৈরি হয় এই পিঠা।
পিঠার রকমফের ও দামদর: এখানে ভাপা পিঠা ৩৫ টাকা, চিতই ২০, দুধ চিতই ১০০, ক্ষীর পাটিসাপটা ৮০, রসভরি ৮০, লবঙ্গ লতিকা ৫০, নারকেল পুলি ৫০, মুগ পাকন ৫০, সুন্দরী পাকন ৫০, নকশি পিঠা ৭৫, মালপোয়া ৫০, চুই পিঠা ১০০, পায়েস ৬০ ও ফিরনি ৬০ টাকা।
০১৭১১–৮১৭৬৯১
৬/৮, স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। এ ছাড়া বনানী ও মোহাম্মদপুরের রিংরোডে আরও দুটি শাখা আছে।
কত ধরনের পিঠা: পিঠা উৎসব চলছে প্রবর্তনায়। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। ১২ রকমের পিঠা পাওয়া যায় এখানে। ভাপা পিঠা, পাটিসাপ্টা, চিতই পিঠা বেশি চলে।
দরদাম: দুই রকমের ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। গুড়ের তৈরি, আরেকটা ঝাল ভাপা পিঠা। দুটিই ৩৫ টাকা। চিতই পিঠার দাম ৩০ টাকা, ডিম চিতই ৪৫, পাটিসাপটা ৫০, গুড়ের তেলের পিঠা ৪০, চিনির তেলের পিঠা ৩৫ টাকা, তিলের পিঠা ২৫, নারকেল পুলি ৩০, সবজি পুলি ৩০, খোলাজা পিঠা ২৫, খোলাজা পিঠা (নারকেল ও গুড়) ৪০ ও মুগ পাকন পিঠা ৪০ টাকা।
বিশেষত্ব: প্রিয়জনদের পিঠার ঝুড়ি উপহার পাঠানোর ব্যবস্থাও আছে এখানে। পিঠা ঝুড়ির এই প্যাকেজে থাকে চারটি ভাপা পিঠা, চারটি চিতই, চারটি সবজি পুলি, চারটি মুগ পাকন, চারটি পাটিসাপটা, চারটি ঝালপোয়া পিঠা, দুটি নকশি পিঠা, চারটি তেলের পিঠা। র্যাপিং, ঝুড়িসহ প্যাকেজটির দাম ১ হাজার ৩৭০ টাকা। ঢাকা মহানগর এলাকার মধ্যে ডেলিভারি দেওয়া হয়, চার্জ ১২০ টাকা।
০১৯১০–৯১১০০৫
১৪২/১, নিউ বেইলি রোড, ঢাকা। এ ছাড়া গুলশান, বসুন্ধরা ও ফার্মগেটেও তাদের শাখা রয়েছে।
৪০ পদের পিঠা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ভাপা পিঠার দাম ৪০ টাকা, চিতই ৩০, মালপোয়া ৫০ ও তেলপোয়া ৪০ টাকা।
০১৭৮৭–৪২২১৬৯ (বেইলি রোড শাখা)
শীতে আয়েশ করে পিঠাপুলি খেতে কে না পছন্দ করে! হিম হিম ঠান্ডা, কুয়াশাঢাকা সন্ধ্যায় নতুন চালের সঙ্গে খেজুরের গুড়ের ভাপা আর ধোঁয়া ওঠা চিতই পিঠার স্বাদই আলাদা। গ্রামগঞ্জে তো বটেই, এই ঢাকা শহরেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে, পাড়ামহল্লায় পিঠা বিক্রেতারা চুলা পেতে পিঠা বানাতে বসে যান। সেখানে পিঠা খেতে আসা মানুষের ভিড় নেহাত কম হয় না। এর বাইরে আছে কিছু ভিন্ন ঘরানার দোকান, যেখানে হরেক স্বাদের পিঠা পাওয়া যায়।
পাহাড়ি পিঠা ঢাকায় বসে উপভোগ করতে চলে আসতে পারেন হেবাংয়ের মিরপুর ও মোহাম্মদপুর শাখায়।
ঠিকানা: মিরপুর শাখা: মেট্রোরেল পিলার নম্বর-২৮৪–এর সামনে, কাজীপাড়ায়। মোহাম্মদপুর শাখা: ২৯ রিংরোড, প্রবাল হাউজিং, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীতে।
কী কী আছে: বিন্নি চালের বিন্নি হোয়া পিঠা, বিন্নি চালের গুঁড়ার বড়া পিঠা, বিন্নি বল, বিন্নি ভাতের বড়া, বিন্নি চালের পায়েস, জুমের আতপ চালের কলা পিঠা, সান্যে পিঠা।
বন্ধ–খোলা: প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
বিশেষত্ব: হেবাংয়ের বড়া পিঠা ছাড়া কোনো পিঠায় অতিরিক্ত চিনি ব্যবহার করা হয় না। আর বেশির ভাগ পিঠা ভাপে তৈরি করা হয়।
০১৭০১–৬১৭৮২০
পিঠার প্রধান একটি উপাদান চাল। এই চালে আছে কার্বোহাইড্রেট। শুধু চাল নয়, খেজুরের বা অন্য কোনো গুড়, নারকেল, এমনকি কোথাও আবার পিঠায় ডিম ব্যবহারেরও রীতি আছে। গুড়েও থাকে কার্বোহাইড্রেট। এ ছাড়া দুধের ব্যবহারে মানুষ প্রোটিন পায়। কোনো কোনো পিঠায় ডালের ব্যবহার হয়। এর ফলে প্রোটিন, শর্করা ছাড়াও খনিজ লবণ পাওয়া যায়। তবে পিঠা তৈরির সময় হাত পরিষ্কার রাখার দিকে গুরুত্ব দেন অধ্যাপক খালেদা।অধ্যাপক খালেদা ইসলাম, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া খুবই অনিরাপদ বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এ রস খেলে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে। এতে মৃত্যুহার ৭০ শতাংশের বেশি। তাই কোনো ধরনের পিঠায় খেজুরের কাঁচা রস একেবারেই দেওয়া যাবে না। তবে রস গরম করে পিঠায় ব্যবহার করা যাবে। তাতে সমস্যা নেই।ডা. আহমেদ নওশের আলম, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ভাইরোলজি বিভাগ, আইইডিসিআর
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনের মাঠ। এখানে ৮-১০টি পিঠার দোকান রয়েছে।
কী কি পাওয়া যায়: প্রায় ১৫ পদের পিঠা পাওয়া যায়। চিতই ১০ টাকা, ভাপা ১০, পুলি (ঝাল ও মিষ্টি) ১০ টাকা, পাটিসাপটার দাম ১৫ টাকা। চার থেকে পাঁচ ধরনের ভর্তা পাওয়া যায়—শর্ষেবাটা, ধনেপাতাবাটা, শুঁটকি, বেগুনভর্তা ইত্যাদি।
আশপাশে দেখার আছে: শহরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট থেকে ৩০ থেকে ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখার অনেক কিছু আছে।
শীতের সন্ধ্যায় পিঠা খেতে সবচেয়ে বেশি ভিড় নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায়। এ ছাড়া নগরের বিভিন্ন মোড়ে বসতে শুরু করেছে শীতের পিঠার ভাসমান দোকান।
কী কী পাওয়া যায়: কাজীর দেউড়ি মোড়ের আশপাশে অন্তত পাঁচটি ভাসমান পিঠার দোকান রয়েছে। এসব দোকানে ভাপা পিঠা বানানোর তোড়জোড় কম। বেশি চাহিদা চিতই পিঠার। প্রতিটি পিঠা ১০ টাকা। আর সঙ্গে রয়েছে নানা পদের ভর্তা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শুঁটকিভর্তা, মরিচভর্তা, শর্ষেভর্তা ও শিমভর্তা। এর বাইরে ভাপা পিঠা প্রতিটি ১০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
নগরের রিকাবীবাজার, জিন্দাবাজার, জল্লার পাড়, চাঁদনীঘাট উত্তর পাড়—এসব এলাকায় পাঁচ থেকে ছয়টি করে পিঠার ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে। শীত শুরুর পর থেকে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বসে দোকানগুলো।
কী কী পাওয়া যায়: তিন ধরনের পিঠা পাওয়া যায়—ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা এবং নারকেলের পপ, ঝাল পপ ও তেলের পিঠা বা সন্দেশ। দাম ১০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। পিঠার সঙ্গে চা, শিঙাড়া, সমুচা, পিঁয়াজু, ছোলা, চটপটি ও ফুচকা পাওয়া যায়। সাধারণত দুই ধরনের ভর্তা পাওয়া যায়। আবার কোনোটিতে তিন ধরনের ভর্তা মেলে। ভর্তার মধ্যে শুঁটকি, শর্ষে ও ধনেপাতার ভর্তা পাওয়া যায়।
আশপাশে ঘোরাঘুরি: খাওয়ার পাশাপাশি নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় কবি নজরুল অডিটরিয়াম, এর পাশে পুলিশ লাইনস এবং সাগরদীঘির পাড় ওয়াকওয়ে রয়েছে। যেখানে ঘুরে বেড়ানো যায়।
হাদিস মিয়ার পিঠাঘর, কলাতিয়া, কেরানীগঞ্জ
কোথায় অবস্থিত: কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া ইউনিয়নের মানিক চৌধুরীর মাঠ এলাকায় পিঠাঘরটি অবস্থিত।
কী কী পিঠা পাওয়া যায়: এখানে চিতই পিঠার সঙ্গে পাওয়া যায় হরেক রকমের ভর্তা। প্রতিটি পিঠার দাম ১০ টাকা। সঙ্গে পাওয়া যায় শুঁটকিভর্তা, ধনেপাতা, কালিজিরা, ডাল ও শর্ষেভর্তা। প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ পিঠা বানানো হয়।
খোলা–বন্ধ: প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এখানে পিঠা পাওয়া যায়।
আশপাশে দেখার কী আছে: পিঠার এই দোকান থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে কলাতিয়া নাজিরপুর নাওখোলা লেক। ব্যাটারিচালিত রিকশায় যেতে ভাড়া নেবে ২০ টাকা। সেখানে দেখা যাবে নাওখোলা লেকের নৈসর্গিক সৌন্দর্য, সবুজে বিস্তীর্ণ লেক পাড়, মেঠো পথ ও তার দুই পাশে উঁচু উঁচু তালগাছ।
কীভাবে যাবেন: রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ থেকে অটোরিকশায় কলাতিয়া এলাকায় মানিক মিয়ার মাঠে সরাসরি আসা যায়। দূরত্ব প্রায় সাত কিলোমিটার। সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করে এলে ভাড়া পড়বে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা।
মোহাম্মদপুর: টাউন হল মোড়ে তিন থেকে চারটি পিঠার দোকান আছে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর পিঠাঘর ও শাহী পিঠাঘরের পিঠা বেশি চলে। এখানে ডিম চিতই, পাটিসাপটা, ভাপা, পুলি, নকশি ও মালপোয়া পিঠা পাওয়া যায়। দাম ১০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।
মিরপুর: মিরপুর–২ নম্বরের লাভ রোডে ও মিরপুর–১০–এ বেশ কিছু পিঠার দোকান আছে।
পূর্বাচল: পূর্বাচলের নীলা মার্কেট, জয় বাংলা চত্বর ও ময়েজ উদ্দিন চত্বরে দুই শতাধিক পিঠাঘর আছে। এসব দোকানে চালের গুঁড়ার চাপ্টি, রুমালি রুটি ও ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। চিতই ও চাপ্টি ১০ টাকা এবং রুমালি রুটি ও ভাপা পিঠা ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
— তথ্য দিয়েছেন ইকবাল হোসেন, কেরানীগঞ্জ; শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী; মানাউবী সিংহ, সিলেট ও ফাহিম আল সামাদ, চট্টগ্রাম