ঢাকায় ২৮ অক্টোবর (গত শনিবার) বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় মোট ৩৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে ১ হাজার ৫৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া কেন্দ্র থেকে আজ সোমবার আনুষ্ঠানিক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়। গতকাল রোববার পর্যন্ত ২৮টি মামলার খবর জানা গিয়েছিল। আজ আরও আটটি মামলার খবর জানা গেল।
২৮ অক্টোবরের ঘটনায় আটটি মামলার এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এসব মামলায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বেশির ভাগকে আসামি করা হয়েছে।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় রমনা থানায় করা মামলায় গতকাল গ্রেপ্তার দেখানোর পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে পুলিশ হত্যাসহ অন্তত চারটি মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল ছাড়া আসামির তালিকায় রয়েছেন—বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রুহুল কবির রিজভী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বরকতউল্লা বুলু, জয়নুল আবদিন ফারুক, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ অনেকে।
যেহেতু সব মামলার এজাহার পাওয়া যায়নি, তাই আরও কাদের আসামি করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
মামলাগুলোয় পুলিশকে হত্যা ও হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি কাজে বাধা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া ইত্যাদি অভিযোগ আনা হয়।
মামলার বেশির ভাগের বাদী পুলিশের সদস্যরা। কয়েকটি মামলার বাদী হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।
সচিবালয়ে গতকাল সকালে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পুরো ঘটনাটিকে বর্বরোচিত ও জঘন্য উদাহরণ বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘মামলা শুরু হয়েছে। অনেকে মামলা দেবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা মামলা দেবে। পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মামলা দেবে। পুলিশ মামলা দেবে।’
ডিএমপি জানিয়েছে, ২১ অক্টোবর থেকে ৯ দিনে ঢাকা মহানগর পুলিশের ৮টি অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা ও সহিংসতার ঘটনায় ১ হাজার ৭২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন ২৮ অক্টোবর, ৬৯৬ জনকে।
মহাসমাবেশের আগের ২ দিনে ৫৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন গ্রেপ্তার করা হয় আরও ২৫৬ জনকে।
বিএনপির অভিযোগ, মহাসমাবেশে জনসমাগমের উপস্থিতি কমাতে পুলিশ গণগ্রেপ্তার করেছে। তারপরও যখন বিপুল লোক এসেছে, তখন সরকার সমাবেশ পণ্ড করার কৌশল নেয়।
বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল একটি বিবৃতি দেন। এতে তিনি বলেন, সরকার বিএনপির মহাসমাবেশে বিপুল মানুষের সমাগম দেখে ‘মাস্টারপ্ল্যান’ করে হামলা করিয়েছে।