কৃষক সমাবেশে হামলা

রৌমারীর ইউএনও, সার্কেল এসপি ও ওসির অপসারণ দাবি বিশিষ্টজনদের

কৃষক সমাবেশে হামলার ঘটনায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সার্কেল এসপি ও রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) অপসারণ চেয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা। গত ২৯ নভেম্বর রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কৃষক সমাবেশে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক, লেখক, কবি, সাংবাদিক, শিক্ষক, গবেষকসহ ৬২ জন সই করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, কুড়িগ্রামের রৌমারীতে হাট-ঘাটের খাজনা বাতিল, কৃষি সংস্কার কমিশন, স্বাধীন স্থানীয় সরকারের দাবিসহ কয়েকটি দাবিতে গত ২৯ নভেম্বর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্বরে কৃষক সমাবেশের আয়োজন করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। নির্ধারিত সময়ে সংগঠনের নেতা–কর্মীরা সমাবেশস্থলে গেলে জামায়াত কর্মীরা এবং আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমান বঙ্গবাসীর জামাই ও ভাগনে মাহবুবের নেতৃত্বে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিনুর ওপর হামলা করা হয়। পরে শহীদ আবু সাঈদের প্রধান আইনজীবী রায়হান কবীর তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। সংগঠক গণবুদ্ধিজীবী ও নাহিদ হাসান এগিয়ে গেলে তাঁকে এবং ভূমিহীন আন্দোলনের নেতা শেখ নাসিরসহ উপস্থিত আরও কয়েকজনকে মারধর করা হয়।

পুলিশের ভাষ্যমতে, সমাবেশের দিন রৌমারী থানায় জামায়াতে ইসলামী সমাবেশ বাতিলের দাবিতে আবেদন জমা দেয়। তাই রৌমারী থানা-পুলিশ মঞ্চ ভেঙে দেয়।

অবশ্য ৩০ নভেম্বর জামায়াতের রৌমারী উপজেলা শাখা থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, হামলার সঙ্গে জামায়াত অথবা ছাত্রশিবিবের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

এদিকে ৬২ নাগরিকের বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, প্রাপ্ত ভিডিও এবং গণমাধ্যমে প্রশাসনের কর্মকর্তারা যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে স্পষ্ট, তাদের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা এই সাহসটা পেয়েছেন। কৃষক সমাবেশে সংগঠক নাহিদ হাসান, শহীদ আবু সাঈদের আইনজীবী রায়হান কবীর, ভূমিহীন আন্দোলনের নেতা শেখ নাসির উদ্দিনের ওপর জামায়াত-শিবিরের নেতা–কর্মীরা হামলা চালান।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রৌমারীর সার্কেল এসপি, রৌমারী থানার ওসি ও ইউএনওর বিবৃতি পড়ে বোঝা যায়, তাঁরাও অন্যতম অপরাধী। তাঁদের অপসারণসহ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান বিশিষ্টজনেরা।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ, সৈয়দ নিজার, জাহেদ উর রহমান, মোরশেদ শফিউল হাসান, মাসকাওয়াথ আহসান, সামিনা লুৎফা, সারোয়ার তুষার, মোহাম্মদ জাহিদুল হক, কল্লোল মোস্তফা, সহুল আহমদ, বাকী বিল্লাহ ও পারভেজ আলম প্রমুখ।