পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জনসমক্ষে আনার আগে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতি নয়, অন্য অ্যাক্টের অধীন তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতের পর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আজিজ আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণার কথা জানানো হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে এবং দুর্নীতি দমন, সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিকভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করছি।’
আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি সেনাবাহিনীর বিষয়। আমি এ মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না।’
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডোনাল্ড লু এসে বলে গেছেন, দুই দেশের মধ্যে অস্বস্তি আছে—এমন বিষয়গুলো পাশে রেখে তাঁরা সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চান। আমরাও তাঁদের একই কথা বলেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্য দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে গেছেন।
ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষকে মানুষের বোঝা টানা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে এখানে নিয়ন্ত্রণ দরকার। আমরা সেটাই চাইছি। বিএনপি আন্দোলনে না পেরে এখন ব্যাটারিচালিত রিকশার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তারা এখানে ভর করেছে।’
ভারতে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের নিখোঁজের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দুই দেশের গোয়েন্দারা কাজ করছেন। কী ঘটেছে, তাঁরা বলতে পারেন।
ভারতের নির্বাচনী জনসভায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনেছেন। এ নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের নির্বাচনী জনসভায় কে কী বলল, সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নির্বাচনী জনসভায় অনেকেই অনেক কিছু বলে। এটা আমাদের কোনো বিষয় নয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বৈশ্বিক সংকটেও বাংলাদেশের অর্থনীতি অগ্রসরমান। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সারা পৃথিবীতে খাদ্যের দাম বেড়েছে। ইউরোপে বেড়েছে। বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এখানেও পণ্যের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো দেশ নয়। তবে সরকার সেটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে ৮০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা অভিনন্দন জানিয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে চায়।