ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা খুইয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে এ ঘটনায় মামলা করেন তিনি। পরে জঙ্গি দমনে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) আন্তদেশীয় প্রতারক চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় দুই লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার দোহার ও মানিকগঞ্জে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের ১৬টি চেকবই, ৬টি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন শফিকুল ইসলাম (৩১) ও মো. জাহিদুল মিয়া (৫০)।
এটিইউয়ের গণমাধ্যম ও সচেতনতা শাখার পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, চার মাস আগে ময়মনসিংহের ভালুকার বাসিন্দা রাজেশ সরকার তাঁর ভাগনের বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের জন্য ভারতের একটি হাসপাতালে যান। ভাগনের চিকিৎসা করাতে ২০ লাখ টাকা লাগবে বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা তাঁকে জানান। স্থানীয় একটি মুঠোফোনের দোকান থেকে টেলিফোন করে বাংলাদেশে অবস্থানরত তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেন রাজেশ।
তখন সেখানে অবস্থানকারী ইলাহী খান ও প্রিতম হালদার নামের দুই ব্যক্তি রাজেশের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম। তাঁরা রাজেশকে আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের দুজন আত্মীয় জাহিদ ও শফিকুল অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভারতে আসবেন। তাঁদের কাছে টাকা দিলে তাঁরা (ইলাহী ও প্রিতম) হাসপাতালের যাবতীয় বিল পরিশোধসহ রাজেশকে সহযোগিতা করবে।
রাজেশ সরকার তাঁদের কাছ থেকে মুঠোফোন নম্বর নিয়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত জাহিদ ও শফিকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা রাজেশের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়াসহ ভারতে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম বলেন, পরে স্বজনেরা রাজেশকে দেওয়ার জন্য জাহিদ ও শফিকুলের দুটি ব্যাংক হিসাব নম্বরে তিন ধাপে মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা করেন।
গত ২৯ অক্টোবর রাজেশ সরকার ভারতে অবস্থানরত ইলাহী খান ও প্রিতম হালদারের কাছে গিয়ে টাকা চাইলে তাঁরা টাকা পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত জাহিদ ও শফিকুলকে ফোন করলে তাঁদের মুঠোফোনও তিনি বন্ধ পান।
এটিইউয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ওয়াহিদা খানম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে দেশে ফিরে রাজেশ গতকাল বুধবার গাজীপুরের শ্রীপুর মডেল থানায় প্রতারণার মামলা করেন। শ্রীপুর থানা–পুলিশ রিকুইজিশনের ভিত্তিতে নিজস্ব নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় শফিকুল ইসলাম এবং জাহিদুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।