মালিবাগে যুবলীগ কর্মী হত্যায় ৮ জন গ্রেপ্তার, চাপাতি উদ্ধার

ঢাকার মালিবাগে যুবলীগ কর্মী শেখ অলিউল্লাহ রুবেলকে কুপিয়ে এই মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার মালিবাগে যুবলীগ নেতা শেখ অলিউল্লাহ রুবেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল গোয়েন্দা বিভাগ। গতকাল শনিবার রাতে মতিঝিলের পীরজঙ্গী মাজার এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. শাহজালাল, মো. হাবিব আহসান, মো. আলিফ হোসাইন, মো. রবিউল সানি, মো. মেহেদী হাসান, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. নুর আলম ও মো. সুমন মীর। তাঁদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেট কার, দুটি মোটরসাইকেল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। হামলার পর এই প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে গিয়েছিলেন গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা।

এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অলিউল্লাহ খুনে জড়িত অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় র‍্যাব। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. আদনান আসিফ (২০) ও মো. শাকিল (২০)। গতকাল রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব বলছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মালিবাগের গুলবাগে নিজের বাসার সামনে অলিউল্লাহকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

ডিবি জানায়, ব্যবসা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। হত্যায় সরাসরি অংশ নেন হাবিব আহসান, আলিফ হোসাইন, রবিউল সানি ও মেহেদী হাসান। আজ রোববার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অলিউল্লাহর সঙ্গে শাহজালাল ও নিবিড় নামের একজনের বিরোধ ছিল। তাঁরা দুজন মিলে অলিউল্লাহকে হত্যার জন্য হাবিবকে ঠিক করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিবিড় চাপাতি কেনার জন্য হাবিবকে চার হাজার টাকা দেন। সেই টাকা দিয়ে হাবিব দুটি চাপাতি কেনেন। ঘটনার আগের দিন শাহজালাল ও হাবিব এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।

ডিবির কর্মকর্তা হারুন বলেন, ঘটনার দিন একজন মোটরসাইকেল নিয়ে অলিউল্লাহর গতিবিধির ওপর নজর রাখেন। হাবিব ও আলিফ চাপাতি নিয়ে তাঁর বাসার সামনে অবস্থান নেন। মেহেদী হাসান ও সানি দুই পাশে পাহারায় থাকেন। রুবেল রিকশা করে বাসার দিকে আসছে—এমন খবর পেয়ে হাবিব ও আলিফ চাপাতি নিয়ে প্রস্তুত থাকেন। তাঁদের হাতে চাপাতি দেখে অলিউল্লাহ দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। তখন পেছন থেকে হাবিব ও আলিফ তাঁকে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে আলিফ চাপাতি দিয়ে মাথায় কোপ দিলে অলিউল্লাহ মাটিতে পড়ে যান। এ সময় হাবিব ও আলিফ চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চারজন একসঙ্গে দৌড়ে পালিয়ে যান।