সনদ–বাণিজ্যে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী সোহেলা পারভীনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ রোববার এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সোহেলা পারভীনকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, সোহেলার স্বামী আলী আকবর খান বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান। এ জন্য তিনি স্বামীকে দিয়ে আরেক আসামি এ কে এম শামসুজ্জামানকে বিভিন্ন সুযোগ–সুবিধার প্রতিশ্রুতি দেন। এর বিনিময়ে নেন তিন লাখ টাকা।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, শামসুজ্জামান ২০০৯ সালে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন সিস্টেম অ্যানালিস্ট হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি ভুয়া শিক্ষা সনদ, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, নম্বরপত্র ইত্যাদি তৈরি করতেন। বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালকেরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে ভুয়া শিক্ষা সনদ তৈরি করে দিতে বলতেন। এ জন্য ছাত্রপ্রতি ৩৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হতো।
ডিবি সূত্র জানায়, কারিগরি বোর্ডের সনদ–বাণিজ্য মামলার প্রধান আসামি এ টি এম শামসুজ্জামান ও সহযোগী আসামি সানজিদা আক্তার ওরফে কলি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ জবানবন্দির ভিত্তিতে সোহেলা পারভীনকে গতকাল দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ডিবি।
সোহেলার পক্ষ থেকে আজ লিখিতভাবে আদালতকে জানানো হয়েছে, পুলিশ ভয়ভীতি দেখিয়ে শামসুজ্জামানের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছেন। হয়রানির জন্য সোহেলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে সোহেলার বিরুদ্ধে শামসুজ্জামানের সঙ্গে টাকাপয়সা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ডিবির একটি সূত্র। একই মামলায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান, সাবেক কর্মচারী ও বর্তমানে শামসুজ্জামানের সনদ তৈরির নিজস্ব কারখানায় নিয়োজিত কম্পিউটারম্যান ফয়সাল হোসেন, গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি, হিলফুল ফুজুল নামের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সরদার গোলাম মোস্তফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা পলিটেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন রিমান্ডে আছেন।