ঝিনাইদহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ-দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের মরদেহ পাওয়া গেছে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তাঁর মরদেহ খুঁজে পেতে একাধিক সূত্র ধরে তল্লাশি অভিযান-তদন্ত চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ। মরদেহ সম্পর্কে নির্দিষ্টভাবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বিভিন্ন সূত্রে এটুকু জানা গেছে, আজীমের মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড অবস্থায় ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের হাতে এসেছে। এ নিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে নারাজ।
ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের পুলিশ এবং নিহত সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্যরা কলকাতায় পৌঁছানোর পরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য জানাতে পারে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে।
পশ্চিমবঙ্গের সিআইডির মহাপরিচালক অখিলেশ চতুর্বেদীকে গতকাল বুধবার বিকেলে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মরদেহ না পাওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কীভাবে সংসদ সদস্য আজীমের মৃত্যু নিশ্চিত করছেন? ওই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁরা বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, আজীমের মরদেহ আগেই পাওয়া গেছে বলে তাদের ধারণা। মরদেহ হাতে না এলে পুলিশের পক্ষে এটা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো না। মরদেহ হাতে এসেছে বলেই তাদের ধারণা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তবে আমি যেহেতু ব্যক্তিগতভাবে এই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত নই, তাই চূড়ান্ত নিশ্চয়তা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
পুলিশ বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত চালাচ্ছে। এসব সূত্রের অন্যতম একটি হচ্ছে লাল মারুতি সুইফট গাড়ির চালক। ওই গাড়িতে করে আততায়ীরা চলাফেরা করেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। গাড়িটি ফরেনসিক পরীক্ষার পরে রাখা হয়েছে পূর্ব কলকাতার নিউটাউন থানায়।
এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মী সন্দীপ রায়ের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে পুলিশ। অবশ্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, সন্দীপের সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আখতারুজ্জামানের (শাহিন) দীর্ঘদিন যোগাযোগ ছিল। তাঁদের যোগাযোগের সূত্র কী ও আখতারুজ্জামানের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সন্দীপ রায় জানতেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংসদ সদস্য আজীম যে ফ্ল্যাটে খুন হয়েছেন, সেটির সিসিটিভি ফুটেজ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ প্রকাশ করেনি। তবে এটি বাংলাদেশের প্রচারমাধ্যমের হাতে যেভাবে হোক, পৌঁছে গেছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বাংলাদেশের পুলিশের হাতে এই ফুটেজ হস্তান্তর করেছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।