ইভ্যালির রাসেল–শামীমা দম্পতির বিচার শুরু

ইভ্যালির চেয়ারম্যান মোছা. শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল
ফাইল ছবি

প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল এবং তাঁর স্ত্রী ও ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান আজ বুধবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আনোয়ারুল হক।

রাসেলের আইনজীবী আহসান হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, ইভ্যালির রাসেল ও তাঁর স্ত্রী শামীমার বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মামলায় আজ বুধবার বিচার শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন আদালত।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অভিযোগ গঠনের সময় আসামি রাসেলকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি নিজেকে নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। অবশ্য অপর আসামি শামীমা নাসরিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

গ্রাহকের ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইভ্যালির রাসেল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত ১১ আগস্ট আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলায় ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।

গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল (বাঁয়ে) এবং তাঁর স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে (ডান থেকে দ্বিতীয়) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব

এজাহারের বরাতে গুলশান থানার পুলিশ জানায়, আরিফ বাকের ও তাঁর বন্ধুরা ইভ্যালির ‘চমকপ্রদ’ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে কিছু পণ্যের অর্ডার করেন। গত বছরের ২৯ মে থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত আরিফ পণ্যের মূল্য বাবদ ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা অনলাইন ব্যাংকিং ও একটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। পণ্য ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে দিতে ব্যর্থ হলে সম্পূর্ণ টাকা ফেরতের অঙ্গীকার করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। সবশেষ গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির গ্রাহকসেবা শাখায় যোগাযোগ করে পণ্য পেতে ব্যর্থ হন তিনি। এর আগে যতবার যোগাযোগ করা হয়, ততবারই তারা দেব-দিচ্ছি বলে টালবাহানা করে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আরিফসহ তিনজন ধানমন্ডির ১৪ নম্বর রোডে ইভ্যালির ‍অফিসে গিয়ে রাসেলের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তাঁরা বাধার শিকার হন। পরে আরিফ বন্ধুদের নিয়ে ইভ্যালির অফিসে প্রতিনিধিদের সঙ্গে পণ্যের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তাঁরা চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে অফিসের ভেতর থেকে রাসেল তাঁকে ভয়ভীতি দেখান এবং তাঁদের টাকা দিতে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে তিনি তাঁদের প্রাণনাশেরও হুমকি দেন। তখন ইভ্যালির চেয়ারম্যান সেখানে উপস্থিত হয়ে পণ্য অথবা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। তিনিও তাঁদের ভয়ভীতি, হুমকি দেওয়াসহ চরম দুর্ব্যবহার করেন।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ইভ্যালি পণ্য বিক্রির নামে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তাঁর মতো অসংখ্য গ্রাহকের ৭০০-৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।