রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনে পুড়ে নিহত চারজনের মধ্যে অজ্ঞাতনামা দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আজ বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
যাঁদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তাঁরা হলেন রশিদ ঢালী (৬০) ও খোকন মিয়া (৩৫)। রশিদ ঢালীর বাড়ি নেত্রকোনায়। তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। আর খোকন মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।
ঢাকা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেতাফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, চেহারা দেখে লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে পরিবারের সদস্যরা পুড়ে যাওয়া এ দুই ব্যক্তির লাশ শনাক্ত করেছেন। রশিদ ঢালীর মুখের অবয়ব, কোমরে বাঁধা তসবি, হাতের আংটি ও জুতা দেখে স্বজনেরা লাশ শনাক্ত করেন। আর আগুন লাগার পর খোকন মিয়া তাঁর মা ও শিশুসন্তানকে ট্রেন থেকে নিচে নামিয়ে আনেন। পরে মালামাল নামানোর জন্য তিনি আবার ট্রেনে উঠেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে আর বের হতে পারেননি। এই লাশ আর কেউ দাবি করেননি। এ কারণে লাশ দুটি স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে এ অগ্নিকাণ্ডে নিহত নাদিরা আক্তার (৩২) এবং তাঁর তিন বছরের ছেলে ইয়াছিন রহমানের মরদেহ গতকাল পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সেতাফুর রহমান আরও বলেন, আজ যে লাশ দুটি হস্তান্তর করা হয়েছে, এর ডিএনএ নমুনা রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে অন্য কেউ যদি লাশ দুটি তাঁদের স্বজনদের বলে দাবি করে, তাহলে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
নেত্রকোনা থেকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল গত সোমবার রাত ১১টার দিকে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে ট্রেনটি যখন ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায়, তখনই সেটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে পুরোপুরি পুড়ে যায় তিনটি বগি।
ট্রেনটি তেজগাঁও রেলস্টেশনে আসার পর আগুন লাগার বিষয়টি বুঝতে পারেন চালক। তখন ট্রেনটি সেখানে থামানো হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভান। এরপর একটি বগি থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আগুন দেওয়ার ঘটনায় গতকাল যাত্রীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছিল, বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর ট্রেনে আগুন লাগার বিষয়টি টের পান যাত্রীরা। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছিল, বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আগুন দিয়ে দুর্বৃত্তরা নেমে যায়। তবে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আজ পুলিশ বলছে, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হওয়ার পর ট্রেনে আগুন লাগার দৃশ্য দেখা গেছে।