বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার কিছু সময় পর বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর জানাজা হয়।
জানাজা শেষে ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এটি স্বাভাবিক নয়। এটা মেনে নেওয়া কষ্টকর। আমি আমার সন্তানকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু আমি এর বিচার চাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
কাজী নূর উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি চাই আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়। এ জন্য আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ফারদিনের লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলেছেন, ফারদিনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলে লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন, গবেষণা করতেন, বুয়েটের ডিবেটিং ক্লাবে যুক্ত ছিলেন।
ফারদিনের জানাজা শেষে তাঁর হত্যার প্রতিবাদে এবং দ্রুত তদন্তের দাবিতে বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে তাঁর সহপাঠীরা মানববন্ধন করেন। এরপর তাঁর লাশ নিয়ে ডেমরার কোনাবাড়ির (তাঁর পরিবার সেখানে থাকে) উদ্দেশে রওনা দেন স্বজনেরা। সেখানে বাদ আসর দ্বিতীয় জানাজা শেষে লাশ নারায়ণগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন গত শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর এক বন্ধু ও এক বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
ফারদিন নূরের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকায়। তবে তাঁর পরিবার বর্তমানে রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়া শান্তিবাগ এলাকায় থাকে।
গত শুক্রবার দুপুরে ফারদিন কোনাপাড়ার বাসা থেকে বুয়েট আবাসিক হলের উদ্দেশে বের হন। পরদিন শনিবার তাঁর পরীক্ষা ছিল। কিন্তু তিনি পরীক্ষায় অংশ নেননি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বাদী হয়ে রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।