রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুটি ঘটনারই অপরাধের কৌশল এক এবং একটি নির্দিষ্ট অপরাধী চক্র এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জালাল সরদার ওরফে মাইকেল (২১), ফজলে রাব্বি ওরফে কালা (২৫) ও মো. ইমরান (৩০)।
পুলিশ বলেছে, গ্রেপ্তার জালাল যাত্রী সেজে গভীর রাতে অটোরিকশা ভাড়া করতেন। পরে সুবিধামতো নির্জন এলাকায় গিয়ে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যেতেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন। তিনি বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার দিকে চালক জিন্নাহ (৬০) গেন্ডারিয়ার জুরাইনের একটি গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হন। পোস্তগোলা থেকে দুই যাত্রী ভাড়া নেন তিনি। যাত্রীরা রাত ৩টার দিকে গেন্ডারিয়া থানার আঞ্জুমান কবরস্থানের সামনে অটোরিকশা নিয়ে যান। পেছন থেকে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিন্নাহ মারা যান। ওই ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর চালক জিন্নাহর ছেলে মো. ইউসুফ হোসেন বাদী হয়ে গেন্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ছালেহ উদ্দিন বলেন, মামলার তদন্ত চলাকালে গত ১৫ অক্টোবর রাত ২টা ৫২ মিনিটের দিকে গেন্ডারিয়ার দ্বীননাথ সেন রোডে কচিকাঁচা বিদ্যানিকেতন গলিতে চালক আনোয়ারকে (৪০) হত্যা করে আরও একটি অটোরিকশা ছিনতাই করে নেওয়া হয়। ওই ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর নিহতের চাচাতো ভাই মো. মানিক গেন্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
দুই মামলার ঘটনা বিশ্লেষণের কথা উল্লেখ করে ডিসি মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, একই অপরাধী চক্র দুটি হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত। গত ২৪ অক্টোবর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানা এলাকা থেকে জালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জালাল দুটি হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, আঞ্জুমান কবরস্থানের পাশে অটোরিকশাচালক জিন্নাহ হত্যার ঘটনায় তাঁর সঙ্গে ফজলে রাব্বিও ছিলেন, কিন্তু দ্বীননাথ সেন রোডে কচিকাঁচা বিদ্যানিকেতন গলিতে অটোরিকশাচালক আনোয়ারকে হত্যাসহ রিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা তিনি একাই করেছেন।
জালালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের উপকমিশনার ছালেহ উদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল। ঘটনার পরপর এগুলো ফেলে দিয়েছেন। অভিযান চালিয়েও সেগুলো উদ্ধার করা যায়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ারী থানা, যাত্রাবাড়ী থানা ও শ্যামপুর থানায় আগুনের ঘটনায় অনেক তথ্য পুড়ে গেছে। কিছু কিছু তথ্য আদালত থেকে নিয়ে এসে তাঁরা কার্যক্রম শুরু করেছেন।