সিআইডির মামলা

‘মাদক ব্যবসায়ী’ দম্পতির ১৩ কোটি টাকার সম্পদ 

রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং সোসাইটিতে নুরুল ইসলামের বাড়ি। এই বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার এক ‘মাদক ব্যবসায়ী’ দম্পতির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ওই দম্পতি মাদক ব্যবসা করে ১৩ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁরা হলেন নুরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী রাজিয়া ইসলাম। 

সিআইডি সূত্র জানায়, ১৫ মাস অনুসন্ধান শেষে এই দম্পতির অবৈধ সম্পদ খুঁজে বের করা হয়। এরপর সিআইডির পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে দুজনের বিরুদ্ধে গত শনিবার ঢাকার আদাবর থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি করেন। 

নুরুল ইসলাম ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক মাত্র ১৩০ টাকা বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি নেন। সিআইডি বলছে, সে সময়ই তিনি ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। ২০০৯ সালে নুরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ ছিল সাড়ে আট লাখ টাকার। এখন ঢাকায় চারটি বাড়িসহ তাঁদের মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি টাকার। রাজিয়ার নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরে জমি ও চারটি বাড়ি এবং সাভার ও টেকনাফে জমি রয়েছে।

সিআইডির পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, মাদকের ব্যবসা করে নুরুল ও রাজিয়া সম্পদ গড়েছেন। তাঁরা ব্যবসা করে আয়ের কথা বলেছিলেন। তবে বৈধ কোনো ব্যবসার নথিপত্র দেখাতে পারেননি।

নুরুল ইসলাম

র‍্যাব ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মাদক, জাল টাকাসহ ঢাকার আদাবর থেকে নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। তখন তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। তিনি এখন জামিনে রয়েছেন। প্রথম আলোতে গত ২৮ জানুয়ারি ‘মাদক ব্যবসার টাকায় ৯ বাড়ি ঢাকায়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে আরেক মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে নুরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রীর বিপুল সম্পদের খবরও প্রকাশিত হয়। 

সিআইডি সূত্র বলছে, নুরুল ও রাজিয়া ইয়াবা ব্যবসার টাকা বৈধ করতে আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসার কাগুজে প্রতিষ্ঠান খুলেছিলেন। তাঁদের দুজনের নামে ১১টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। এসব ব্যাংক হিসাবে গত এক যুগে বিপুল টাকা লেনদেন হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে নুরুল ইসলামের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তাঁর স্ত্রী রাজিয়ার বক্তব্য নিতে গতকাল মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। ফোন ধরেন এক ব্যক্তি, যিনি নিজের পরিচয় দিতে রাজি হননি। প্রতিবেদক তাঁর পরিচয় দিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে কলটি কেটে দেওয়া হয়।