বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা মামলার আসামি আমিন আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় আমিন আহমেদ অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। সম্প্রতি আপিল বিভাগ আমিন আহমেদকে সাত দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমিন আহমেদ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এই মামলায় আমিন আহমেদের পক্ষে জামিন শুনানিতে আইনজীবী ছিলেন এহসানুল হক সমাজী।
এর আগেও ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আমিন আহমেদ, যার শুনানি নিয়ে গত ১০ জুন আদেশ দেওয়া হয়। আদেশে আমিন আহমেদকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি এ সময় তাঁকে হয়রানি বা গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আপিল বিভাগে আবেদন করে। ১২ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দিয়ে দুদকের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ৩০ জুন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আমিন আহমেদকে সাত দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।
এর আগে আবদুল হাই ওরফে বাচ্চু, তাঁর স্ত্রী শিরিন আক্তার, আবদুল হাইয়ের ভাই শেখ শাহরিয়ার ওরফে পান্না, আবদুল হাইয়ের মেয়ে শেখ রাফা হাই, ছেলে শেখ ছাবিদ হাই ও দলিলদাতা আমিন আহমেদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর মামলাটি করে দুদক। অভিযোগ অনুসারে, আবদুল হাই নিজ নামে এবং তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় ৩০ কাঠার মতো জমি কিনেছিলেন। জমির প্রকৃত দাম ছিল ১১০ কোটি টাকা। যদিও তিনি দর দেখান মাত্র ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। জমির দাম কম দেখিয়ে ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা মানি লন্ডারিং করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী অপরাধ।
গত বছরের ২ অক্টোবর আবদুল হাই, আমিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।