মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে গ্রেপ্তার আরও ৭

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত আরও সাতজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁদের মধ্যে ঢাকার নামকরা স্কুলের এক শিক্ষিকা ও বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত ছয়জন চিকিৎসক রয়েছেন।

আজ বুধবার ও গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে আটটি মুঠোফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাকসুদা আক্তার ওরফে মালা (৫২) এবং চিকিৎসক কে এম বশিরুল হক (৪৮), অনিমেষ কুমার কুণ্ডু (৩৩), জাকিয়া ফারইভা ওরফে ইভানা (৩৫), সাবরিনা নুসরাত রেজা ওরফে টুসী (২৫), জাকারিয়া আশরাফ (২৬) ও মৈত্রী সাহা (২৭)।

গত ৩০ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত অভিযোগে মোট ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

সিআইডির গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান বলেন, এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্য ও ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া অসংখ্য শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া যায়। মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মূলহোতা জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া ওরফে মুন্নুর কাছে থেকে উদ্ধার হওয়া গোপন ডায়েরি থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই সব তথ্যের ভিত্তিতে আজ ও গতকাল রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মিরপুর মডেল থানায় হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ পাবলিক পরীক্ষা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সিআইডির সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার শিক্ষক মাকসুদা ২০১৫ সালে নিজের মেয়েসহ আরও সাতজন শিক্ষার্থীকে ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। গ্রেপ্তার চিকিৎসক কে এম বশিরুল হক রাজধানীর থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য। চিকিৎসক অনিমেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা। তিনি ২০১৫ সালে ১০ শিক্ষার্থীকে ফাঁস করা প্রশ্নপত্র দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। জাকিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি ২০০৬-০৭ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ৬০তম স্থান অর্জন করেন। তিনি তখন মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম মূলহোতা ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধানের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন। গ্রেপ্তার সাবরিনা রংপুর মেডিকেল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। চিকিৎসক অনিমেষের ফাঁস করা প্রশ্নপত্র পড়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। গ্রেপ্তার জাকারিয়া ও মৈত্রী সাহা ২০১৫-১৬ সেশনের ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাঁরাও অনিমেষের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।