রাজধানীতে অস্ত্র ছাড়াই ১১ কোটি টাকা ডাকাতি

টাকা
প্রতীকী ছবি

তাঁদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। একজন নিজেকে ডিবি পরিচয় দেন। এরপর সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মীদের চড়থাপ্পড় ও ঘুষি মেরে তাঁরা সোয়া ১১ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে রাজধানীর উত্তরায় এ ঘটনা ঘটে।
ডাকাত দলটি মাইক্রোবাসে এসে সিকিউরিটি কোম্পানি মানি প্ল্যান্ট লিংক (প্রাইভেট) লিমিটেডের গাড়ির গতি রোধ করে। এরপর গাড়িতে থাকা কর্মীকে চড়থাপ্পড় ও ঘুষি মেরে টাকাভর্তি চারটি ট্রাংক ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই টাকা মিরপুর ডিওএইচএস থেকে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের সাভারের ইপিজেড বুথে নেওয়া হচ্ছিল।

টাকা বহন করার সময় নিয়ম অনুযায়ী সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা। তবে গতকাল ঘটনার সময় মানি প্ল্যান্ট লিংকের কর্মীদের হাতে অস্ত্র ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অবশ্য এই ডাকাতির ঘটনার ৯ ঘণ্টার মাথায় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে খিলক্ষেতের লা মেরিডিয়ান হোটেলের আশপাশে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের সাতজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মানি প্ল্যান্ট লিংকের দুজন পরিচালক আছেন। তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ট্রাংক উদ্ধার করা হয়। সেখানে পাওয়া গেছে প্রায় ৯ কোটি টাকা।

ঘটনার পরপরই ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও টাকা উদ্ধারে অভিযানে নামা হয় জানিয়ে ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, তাঁরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলের সাতজনের অবস্থান নিশ্চিত হন। এর পরপরই অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার ও তিনটি ট্রাংক উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপির ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাত দলের গাড়ির নম্বরপ্লেট পাওয়া গেছে। ওই ডাকাতির সঙ্গে জড়িত অন্যদের নাম-ঠিকানাও জানা গেছে। এখন বাকি ডাকাতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।  

এর আগে দুপুরে তুরাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, উত্তরার ১৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় একদল ডাকাত একটি মাইক্রোবাসকে আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়ির গতিরোধ করে। এরপর মাইক্রোবাস থেকে ১০-১২ জন সশস্ত্র ডাকাত নেমে মানি প্ল্যান্টের গাড়ির দরজা ভেঙে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি ও মারধর করে টাকাভর্তি চারটি ট্রাংক ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। এসব ট্রাংকে সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিল।

তবে রাতে পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার বদরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। তাঁদের একজন নিজেকে ডিবি পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করেন। ডাকাতেরা সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মীদের চড়থাপ্পড় ও ঘুষি মেরে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। টাকা বহনের সময় নিয়ম অনুযায়ী সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না।  

বিষয়টি শুনেছেন উল্লেখ করে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, টাকা বহন ও এটিএম বুথে জমার দায়িত্ব নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের। তা ছাড়া এই টাকা বিমার আওতায় রয়েছে।