মাদক ব্যবসা করলেও কুতুব উদ্দিন পরিচয় দিতেন আবাসন ব্যবসায়ী হিসেবে। আমদানি–রপ্তানি ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসা নুরুল ইসলামের।
‘অসত্যের কাছে কভু নত নাহি শির,/ ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর’—ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার পর কুতুব উদ্দিন নিজের সম্পর্কে পোস্টারে এই উক্তি ব্যবহার করেছিলেন। নির্বাচনে ‘বীরের’ মতো টাকা খরচ করেছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘ভক্ত’ এই কুতুব। তবে বিপুল ভোটে হারতে হয়েছে তাঁকে। নিজ এলাকা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কুতুবের পরিচয় ঢাকার ‘বড় আবাসন ব্যবসায়ী’। তবে পুলিশ বলছে, কুতুবের আসল পরিচয় আড়ালে থাকা বড় মাদক ব্যবসায়ী। মাদক ব্যবসা করে গত এক দশকে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাড়ি করেছেন চারটি। এর মধ্যে দুটি বাড়ি নয়তলা, একটি দশতলা।
কুতুবের মতোই ‘বড় ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে নুরুল ইসলামের। ২০০১ সালে টেকনাফ বন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক মাত্র ১৩০ টাকা বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। চাকরি ছাড়েন ২০০৯ সালে। এর পরের ১৪ বছরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও আদাবরে তাঁর পাঁচটি বাড়ি হয়েছে।
পুলিশ বলছে, নুরুলও বড় মাদক ব্যবসায়ী। সামান্য বেতনে টেকনাফে চাকরি শুরু করার সময়ই জড়িয়ে পড়েন ইয়াবার কারবারে। মূলত ইয়াবা ব্যবসার টাকা বৈধ করতেই আমদানি–রপ্তানি ব্যবসার কাগুজে প্রতিষ্ঠান খোলেন। নুরুল ও তাঁর স্ত্রীর নামে মোট ১১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। ওই সব হিসাবে গত এক যুগে ১৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
■ ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে চারটি বাড়ি কুতুব উদ্দিনের। এর মধ্যে দুটি নয়তলা, একটি দশতলা।
■ ঢাকার মোহাম্মদপুর ও আদাবরে পাঁচটি বাড়ি নুরুল ইসলামের। জমি আছে সাভার ও টেকনাফে।
কুতুব ও নুরুলের বিষয়টি সামনে এসেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং র্যাবের পৃথক দুটি চিঠির ভিত্তিতে সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) অনুসন্ধান ঘিরে। কুতুবের বিষয়ে সিআইডির কাছে ২০১৯ সালে চিঠি পাঠায় বিএফআইইউ। আর নুরুলের বিষয়ে সিআইডিকে ২০২১ সালে চিঠি লেখে র্যাব। ওই দুই চিঠির ভিত্তিতে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর সিআইডি গত সপ্তাহে প্রথম আলোকে বলেছে, কুতুব ও নুরুল মাদক ব্যবসা করেই বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে কুতুবের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ১১ জানুয়ারি। আর নুরুলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শিগগরিই মামলা করা হবে।
রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ‘মেসার্স রনি এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে কুতুবের (তাঁর ডাকনাম রনি)। ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের বিষয়টি নজরে আসার পর বিএফআইইউ ২০১৯ সালে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য সিআইডিকে চিঠি দেয়। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে সিইআইডি জানতে পারে কুতুবের দুটি বাড়ি রয়েছে কেরানীগঞ্জে। এ ছাড়া একটি ব্যাংকে কুতুবের হিসাব নম্বরে (অ্যাকাউন্ট) সাত বছরে ৩১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকার বংশাল থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে সিআইডি। তদন্ত শেষে কুতুব ও তাঁর সহকারী মো. শাকিলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে (১১ জানুয়ারি) সিআইডি।
সিঅঅইডি বলছে, রাজধানীর তিনটি থানায় কুতুবের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা রয়েছে তিনটি। দেড় বছ আগে একটি মামলায় গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে রয়েছেন কুতুব উদ্দিন। আর তাঁর সহযোগী শাকিল এখনো পলাতক।
ঢাকায় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের পরিদর্শক মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, মাদকের টাকায় কুতুব উদ্দিন বাড়িসহ প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েছেন। তদন্তের সময় তাঁকে একাধিকবার সম্পদের বিপরীতে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি।
অন্যদিকে মাদক, জাল টাকাসহ ঢাকার আদাবর এলাকা থেকে ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে র্যাব তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অনুসন্ধানের জন্য সিআইডিকে চিঠি দেয়। দীর্ঘ ১৫ মাস অনুসন্ধান করে সিআইডি ঢাকার মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় তাঁর পাঁচটি বাড়িসহ ১৩ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে। মাদক মামলায় জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তিনি আর প্রকাশ্যে আসছেন না।
সিআইডির ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাগজে-কলমে নুরুল ইসলামের যে সম্পদের তথ্য আমরা পেয়েছি, বাস্তবে তাঁর সম্পদ প্রায় তিন গুণ বেশি হবে।’
কুতুব উদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার দক্ষিণ ছদাহা এলাকায়। তাঁর বাবা একসময় গ্রামে কৃষিকাজ করতেন।
সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কুতুব মাদক ব্যবসা আড়াল করতে ঢাকার কাপ্তান বাজারে প্রথমে ‘মেসার্স রনি এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি কাগুজে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলেন। এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ‘আয়’ জমা করতেন ঢাকার নবাবপুরে একটি বেসরকারি ব্যাংকের খোলা নিজের অ্যাকাউন্টে। পরে মাদকের টাকায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জমি কিনে ভবন তৈরি করে ফ্ল্যাট বিক্রির ব্যবসায় নামেন। হাসনাবাদে বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকার এ ব্লকের ৮ নম্বর রোডে ৪৮৭ নম্বর প্লটে একটি ৯তলা এবং ৯ নম্বর রোডের ৬৪৮ নম্বর প্লটে ১০ তলা বাড়ি করেছেন তিনি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ব্যাংক হিসেবে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ২৯৮ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কুতুব উদ্দিন ২০১০ সালে টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে ঢাকায় বিক্রি শুরু করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকার শ্যামপুর, খিলগাঁও ও বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এসব মামলা হয়েছে। এর দুটি মামলা করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। অন্য মামলাটি করেছে র্যাব।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে হাসনাবাদ এলাকায় গিয়ে ওই দুই বাড়ি ছাড়াও কুতুবের আরও দুটি বাড়ি থাকার তথ্য জানা গেছে। বসুন্ধরা রিভারভিউয়ের এ ব্লকের ৪ নম্বর রোডে তাঁর আরেকটি ৯তলা বাড়ি রয়েছে। ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী আমীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাড়ির অনেকগুলো ফ্ল্যাট অবিক্রীত রয়েছে। রনি স্যার গ্রেপ্তার হওয়ার পর আর কোনো ফ্ল্যাট বিক্রি হয়নি।’
কুতুবের আরেকটি বাড়ি রয়েছে হাসনাবাদের খামারবাড়ি রোডে। সেখানে ৭০৩ নম্বর প্লটে নির্মাণাধীন চারতলা বাড়িটি তাঁর। ওই বাড়ির গেটে গতকাল দুপুরে তালা ঝোলানো ছিল। পাশের বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী দুলাল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বছরখানেক ধরে বাড়িটির নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। বাড়িটি রনি (কুতুব উদ্দন) চেয়ারম্যানের।
২০১৬ সালে সাতকানিয়ার ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিপুল ভোটে হেরে যান কুতুব। তবে লোকজনের কাছে তিনি ‘রনি চেয়ারম্যান’ হিসেবে পরিচিতি পান।
প্রথম আলোর সাতকানিয়া প্রতিনিধি জানান, কুতুব উদ্দিন সাতকানিয়ার একটি আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেন। পরে তিনি চট্টগ্রামে নগরে ও ঢাকায় থাকতেন। স্থানীয় লোকজন বলছেন, ব্যবসার কাজে মাঝেমধ্যে তিনি মালয়েশিয়া আসা-যাওয়া করতেন এমনটা জানতেন। ঢাকার নবাবপুরে কুতুবের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে বলেও এলাকার প্রচার রয়েছে। তবে এলাকার লোকজন এখন জানেন, কুতুব মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুতুব হেরে গেলেও প্রায় ৪৫ লাখ টাকা খরচ করেছিলেন—এমন প্রচার আছে এলাকায়।
বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকার এ ব্লকের ৮ নম্বর রোডে ৪৮৭ প্লটের ৯তলায় থাকে কুতুব উদ্দিনের পরিবার। ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী মো. শহীদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বাড়ির একটি ফ্ল্যাট ছাড়া বাড়িগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। শহীদের মাধ্যমে কুতুব উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চান এই প্রতিবেদক। তবে তাঁরা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কাপ্তান বাজারের গিয়ে মেসার্স রনি এন্টারপ্রাইজ নামের কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেখানকার কয়েকজন ব্যবসায়ীরা বলেন, ওই নামে কাপ্তান বাজারে কোনো দোকান কখনোই ছিল না। তবে এ নামের একটি দোকান আগে পুরান ঢাকার নবাবপুর এমএস ইলেকট্রনিকস বিপণিবিতানের তৃতীয় তলায় ছিল।
নবাবপুর এমএস ইলেকট্রনিকস বিপণিবিতানের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তিন থেকে চার বছর আগে ওই দোকানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই দোকানে কী কেনাবেচা হতো সেটা বলতে পারেননি তিনি।
নুরুল ইসলামের বাড়ি ভোলা জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম কানাইনগর এলাকায়। অভাবের কারণে পড়াশোনা করতে পারেননি। ২০০৯ সালে তিনি টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিক ভিত্তিতে (মাস্টাররোলে) চাকরি শুরু করেন। সিআইডি সূত্র জানায়, চাকরির পাশাপাশি তিনি ইয়াবা কারবারে জড়ান। ইয়াবা ব্যবসার টাকা বৈধ করতে তিনটি কাগজে প্রতিষ্ঠান খোলেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মেসার্স আল নাহিন এন্টারপ্রাইজ, মিফতাহুল এন্টারপ্রাইজ ও আলফা এন্টারপ্রাইজ। আমদানি–রপ্তানির ব্যবসার নামে তাঁরা এসব প্রতিষ্ঠান খুলে মাদকের টাকা বৈধ করার চেষ্টা করেছেন।
সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, নুরুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানের নামে ঢাকার মোহাম্মদপুর, শ্যামলী ও টেকনাফে বিভিন্ন ব্যাংকের ১১টি অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। মেসার্স আল নাহিন এন্টারপ্রাইজের নামে বেসরকারি একটি ব্যাংকের শ্যামলী শাখায় ২০১৭ সালে একটি হিসাব খোলা হয়। সেই হিসাবে ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জমা হয়েছে ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তুলে নেওয়া হয়েছে ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ টাকা। বর্তমানে ওই ব্যাংক হিসেবে ১ কোটি ৫ লাখ ১৫ টাকা স্থিতি রয়েছে।
সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, মাদক ব্যবসার টাকায় গত ১০ বছরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকায় জায়গা কিনে পাঁচটি বাড়ি করেছেন নুরুল ও রাজিয়া দম্পতি। মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানের ৪ নম্বর রোডের ডি ব্লকে দুটি বাড়ি রয়েছে তাঁদের (বাড়ির নম্বর ৩৫ ও ৬৬)। একই এলাকার চন্দ্রিমা মডেল টাউনের ৭ নম্বর রোডের বি ব্লকের ১০ নম্বর বাড়িটিও তাঁদের। আদাবর নবীনগর হাউজিং এলাকার ৮ নম্বর রোডের ৬৮/৭০ নম্বর আধা পাকা আরেকটি বাড়ি রয়েছে নুরুলের। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়িটিও তাঁর। সাততলা এই বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন নুরুল।
সিআইডি বলছে, নুরুলের স্ত্রী রাজিয়ার নামে মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর মৌজায় ৩ ও ৭ দশমিক ৪৭ কাঠার দুটি প্লট, সাভারের আমিনবাজার এলাকায় ৫৩ শতাংশ জমি রয়েছে। এ ছাড়া রাজিয়ার নামে টেকনাফে প্রায় ২৩ শতাংশ জমি রয়েছে।
সিআইডির অনুসন্ধানে উঠে আসা সম্পদের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গতকাল কয়েক দফা মুঠোফোনে নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে প্রথম আলো। তবে তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার নুরুলের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে প্রথম আলো। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করে এসব সম্পদ করেছি। আমরা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই। নিয়মিত আয়কর দিচ্ছি আমরা।’
স্বামীর বিরুদ্ধে র্যাবের করা মাদক ও জাল টাকার মামলার বিষয়ে রাজিয়া দাবি করেন, ‘সেটা সাজানো।’
তবে নুরুলের বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর সিআইডি বলছে, মূলত অবৈধ সম্পদকে বৈধ হিসেবে দেখানোর জন্য ২০০৯ সালে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। সিআইডির পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নুরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী অর্জিত সম্পদের কোনো বৈধ কাগজপত্র দিতে পারেননি। অনুসন্ধানে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, মাদকের কারবার করে তাঁরা এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন।’