চিকিৎসক শাকির বিন ওয়ালীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর বাবা এ কে এম ওয়ালী উল্লাহ। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এ কে এম ওয়ালী উল্লাহ বলেন, তিন দিন (রোববার) আগে তাঁর ছেলেকে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া সাদাপোশাকে চার ব্যক্তি বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যান। চতুর্থ দিন (আজ বুধবার) পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন, তাঁর ছেলেকে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।
এদিকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, শাকির নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য। কথিত হিজরতের নামে ঘর ছেড়ে যাওয়া কুমিল্লার সাত তরুণের সহযোগী শাকির। তিনি নানাভাবে তরুণ-যুবকদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে আসছিলেন। তিনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জঙ্গি সংগঠনটির জন্য সদস্য সংগ্রহ, সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও কথিত হিজরতে যেতে সহায়তা করতেন।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওয়ালী উল্লাহ বলেন, শাকির তাঁদের চেনেনই না। তাঁকে অন্যায়ভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
শাকিরের বাবা চিকিৎসক এ কে এম ওয়ালী উল্লাহর অভিযোগ, গত রোববার দুপুরের পর রামপুরার বাসা থেকে তাঁর ছেলেকে সিআইডির পরিচয় দিয়ে সাদাপোশাকে থাকা চার ব্যক্তি তুলে নিয়ে যান। সেদিন রাত ১০টার দিকে তাঁরা আবার এসে শাকিরের মুঠোফোন নিয়ে যান। এখন শাকিরকে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তারের কথা জানাল সিটিটিসি।
তবে সিটিটিসির কর্মকর্তাদের দাবি, গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রামপুরার হাজীপাড়া থেকে শাকির বিন ওয়ালীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন ঢাকার মগবাজার থেকে শাকিরের সহযোগী আবরারুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। শাকিরের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আবরারুল কথিত হিজরতের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর শাকির ও আবরারুলের বিরুদ্ধে গতকাল রামপুরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। সিটিটিসির করা এ মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি কুমিল্লা থেকে একযোগে সাত তরুণ বাড়ি ছাড়েন। এইচএসসি থেকে স্নাতকপড়ুয়া এসব তরুণ আনসার আল ইসলামের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘হিজরতের’ নামে ঘর ছেড়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তথ্য রয়েছে। উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঘর ছেড়ে যাওয়াকে জঙ্গিরা ‘হিজরত’ (দেশত্যাগ বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যাওয়া) বলে।