সংবাদ সম্মেলনে জুয়েল মিয়া হত্যার তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক। ঢাকা, ২৫ জানুয়ারি
সংবাদ সম্মেলনে জুয়েল মিয়া হত্যার তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক। ঢাকা, ২৫ জানুয়ারি

মোহাম্মদপুরে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার সহকর্মী

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে জুয়েল মিয়া (২০) নামের এক নিরাপত্তাকর্মীর হাত–পা বাঁধা লাশ গতকাল বুধবার উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর গায়ে আঘাতের অনেকগুলো চিহ্ন ছিল। তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে সহকর্মী আখতার হোসেন গতকালই গ্রেপ্তার হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

আজিমুল বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ মিরপুর রোডের একটি বেসরকারি সংস্থার জেনারেটর কক্ষের ভেতর থেকে জুয়েলের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ২৩ জানুয়ারি ভোর ৫টা ৬ মিনিটের দিকে নিরাপত্তাকর্মী আখতার হোসেন একটি স্টিলের পাইপ হাতে চেয়ারের ওপরে কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে থাকা জুয়েল মিয়ার দিকে এগিয়ে যান। এরপর জুয়েলকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। একপর্যায়ে জুয়েল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখনো আখতার তাঁকে নৃশংসভাবে পেটান। এরপর জুয়েলের হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে জেনারেটর রুমের দিকে নিতে থাকেন। সে সময়ও তিনি স্টিলের পাইপ দিয়ে জুয়েলকে তিন দফায় পেটান।

সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ কর্মকর্তা আজিমুল আরও বলেন, লাঠির আঘাতে জুয়েলের মাথা, চোখ, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এরপর তাঁর হাত–পা বেঁধে কম্বল মুড়িয়ে জেনারেটর কক্ষে ঢুকিয়ে রুমটি বন্ধ করে পালিয়ে যান আখতার।

জুয়েলের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবার মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করে। প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার এলাকার একটি কারখানা থেকে আখতারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আখতারকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে আজিমুল হক বলেন, আখতার হোসেন দেড় বছর ধরে ‘সিদীপ’ নামের এনজিওতে কাজ করেন। জুয়েল মিয়া ১ জানুয়ারি একই প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে যোগ দেন। দায়িত্ব চলাকালে জুয়েল প্রায়ই অফিসের বাইরে যেতে চাইলে আখতার বাধা দিতেন। এতে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। আখতার আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি করায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। তিনি এর সুযোগ নিয়ে অন্যদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতেন। জুয়েল এটি মেনে নিতে পারেননি। এ ছাড়া দুজনের মধ্যে আরও কিছু বিষয় নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভ থেকে ঘুমন্ত জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করেন আখতার।