গ্রেপ্তার ৪

কখনো নৌপথে, কখনো সড়কপথে ইয়াবা পাচার করেন তাঁরা: ডিএনসি

মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে ৪০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। তাঁরা কখনো নৌপথে, কখনো সড়কপথে ইয়াবা পাচার করেন, বলেছে ডিএনসি।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন, যাঁরা বাহক হিসেবে কাজ করছিলেন বলে ডিএনসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন সাধন তনচংগ্যা (২৫), ফাতেমা (৩৫), মমিনা বেগম (২০), ইয়াকুব আলী (৪০)।

চারজনকে গ্রেপ্তারের খবর জানাতে আজ শুক্রবার সকালে তেজগাঁওয়ে ডিএনসির ঢাকা মহানগর উত্তর অঞ্চলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, গত বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আলাদা তিনটি অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রের সদস্যরা মূলত দেশের উত্তরাঞ্চলে ইয়াবা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা কক্সবাজার থেকে প্রথমে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসেন। তারপর সেটি উত্তরাঞ্চলে পাঠিয়ে দেন।

ডিএনসি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে দুই নারী ফাতেমা ও মমিনা বেগম প্রথমে সড়কপথে কক্সবাজার থেকে চাঁদপুরে আসেন। তারপর নৌপথে ঢাকায় এসে ইয়াবার চালান সরবরাহ করেন।

গতকাল সদরঘাট এলাকা থেকে চার হাজার ইয়াবাসহ তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা লাগেজের মধ্যে বিশেষ কৌশলে ইয়াবা লুকিয়ে রেখে সেটি পাচার করেন। তাঁদের দুজনের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফে। একই কৌশলে একাধিক ইয়াবার চালান ঢাকায় নিয়ে এসেছেন তাঁরা।

ডিএনসির কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে সাধন তনচংগ্যা নামের এক মাদক কারবারি রয়েছেন। তাঁর বাড়ি রাঙামাটিতে হলেও উত্তরবঙ্গকেন্দ্রিক মাদক চক্রের অন্যতম সদস্য তিনি। তাঁকে গতকাল ঢাকার গাবতলী থেকে ১১ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এই চালান তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে রাঙামাটিতে নিয়ে যান। সেখান থেকে একটি পরিবহনে গাবতলীতে নিয়ে আসেন। এই চালানের সর্বশেষ গন্তব্য ছিল ঠাকুরগাঁও।

মাদক সংগ্রহ, পরিবহন এবং বিক্রি করেন নিজেই

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ইয়াকুব আলীকে ঢাকার মিরপুর থেকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে ডিএনসি। সংস্থাটির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটওয়ারী জানান, রংপুর অঞ্চলে ইয়াবা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছিলেন ইয়াকুব। তিনি থাকেন ঢাকার মিরপুরে। তিনি টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে নিজেই ইয়াবা সংগ্রহ করেন। ইয়াবা সংগ্রহ করার জন্য কয়েক দিন সংগ্রহস্থলের আশপাশের হোটেলে পর্যটক সেজে অবস্থান করেন তিনি। পরে নিজস্ব পরিবহনে করে ইয়াবার চালান ঢাকায় নিয়ে আসেন তিনি। ইয়াবা পরিবহনের জন্য একটি মাইক্রোবাস এবং একটি মোটরসাইকেল কিনেছেন ইয়াকুব।

ডিএনসি জানায়, প্রায় এক মাস ধরে ইয়াকুবের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। গতকাল বিকেলে মোটরসাইকেলে করে তিনি ২৫ হাজার ইয়াবা ঢাকায় নিয়ে আসেন।

এমন তথ্য পেয়ে গতকাল বিকেলে তাঁকে ২৫ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএনসির ঢাকা মহানগর উত্তর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াকুব পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

এর আগে তিনি ৫০ হাজার ইয়াবাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার হয়ে কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আবারও তিনি ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।