দুই বছর আগে ঢাকার মিরপুরে দিনদুপুরে কুপিয়ে যুবক সাহিনুদ্দিনকে (৩৩) খুনের মামলাটি এবার তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম আজ সোমবার এ আদেশ দেন। এর আগে মামলাটি পল্লবী থানা-পুলিশ, ডিবি এবং পিবিআই তদন্ত করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, মিরপুরের সাহিনুদ্দিন খুনের মামলায় সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালসহ ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই। ওই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন দেন সাহিনুদ্দিনের মা আকলিমা খাতুন। হত্যায় জড়িত মূল এক ব্যক্তিকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এমন দাবি করে তিনি আদালত নারাজি আবেদন দেন। আবেদনটি মঞ্জুর করে মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এম এ আউয়াল ইসলামী গণতন্ত্রী পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি খুনের মামলায় জামিনে রয়েছেন এবং রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ‘প্রগতিশীল ইসলামী জোট’ নামে একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করেছেন।
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ২০২১ সালের ১৬ মে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সিরামিকস রোডে ছয় বছর বয়সী শিশু সন্তানের সামনে সাহিনুদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পিবিআই, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র্যাব সূত্র জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট একটি অডিও ক্লিপও তাদের হাতে আসে। সেখানে শোনা যায়, হত্যাকারীদের একজন আউয়ালকে ফোন করে বলছেন, ‘স্যার, ফিনিশ। এই কথোপকথন পরীক্ষা করে পুলিশ ও র্যাব নিশ্চিত হয়, কণ্ঠটি সুমন ব্যাপারী নামের এক ব্যক্তির। তিনি সাহিনুদ্দিন হত্যা মামলার আসামি।
২০২১ সালের ১৭ মে সাহিনুদ্দিনের মা মোসাম্মৎ আকলিমা বাদী হয়ে ২০ জনকে আসামি করে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পল্লবী থানা-পুলিশ ও ডিবির পর মামলাটির অধিকতর তদন্তভার পায় পিবিআই। প্রায় দেড় বছর তদন্ত করে পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। ঘটনার পরপরই সাহিনুদ্দিন হত্যায় ‘সরাসরি অংশ’ নেওয়া মানিক র্যাবের সঙ্গে ও মনির ডিবির সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
অভিযোগপত্রে আউয়াল ছাড়া অন্যরা হলেন মোহাম্মদ তাহের (৪৮), মো. সুমন ব্যাপারী (৩৪), মো. মুরাদ (২৪), টিটু শেখ (৩২), গোলাম কিবরিয়া খান (৫০), মো. ইব্রাহিম সুমন ওরফে বাওয়া সুমন (৩১), শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক (২৬), রকি তালুকদার ওরফে রকি (২৬), নূর মোহাম্মদ হাসান (২০), ইকবাল হোসেন ওরফে ইকবাল নূর (২০), মো. শরীফ (২১), তরিকুল ইসলাম ওরফে ইমন (২৪), তুহিন মিয়া (২০), হারুনুর রশীদ ওরফে হারুন (২০) ও প্রতীক আহমেদ ওরফে সজীব (৩৩)।