অস্ত্র
অস্ত্র

আওয়ামী লীগের মেয়াদে লাইসেন্স পাওয়া ১ হাজার ৬৫৪টি অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি

মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে শুরু হওয়া যৌথ অভিযানে কত সংখ্যক অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্র জমা পড়ল, তা গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত জানাতে পারেনি পুলিশ সদর দপ্তর। তবে এ সময় প্রথম আলোর প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, দেশের আট বিভাগে ৯ হাজার ১৯১টি বৈধ অস্ত্র থানাগুলোতে জমা পড়েছে। বাকি ১ হাজার ৬৫৪টি জমাযোগ্য বৈধ অস্ত্র এখনো জমা দেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিন ও পরদিন (৫ ও ৬ আগস্ট) ১১ ধরনের মোট ৫ হাজার ৮২৯টি অস্ত্র লুট হয়। এর মধ্যে ৩ হাজার ৬৩টি উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টা ছিল সব ধরনের বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়। উদ্ধার তালিকার মধ্যে বিভিন্ন থানা থেকে লুট করা অস্ত্র যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে লাইসেন্স স্থগিত করা বৈধ অস্ত্রও। অস্ত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষে সশস্ত্র বাহিনী (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসারের সমন্বয়ে যৌথ আভিযানিক দল গঠন করে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়।

অভিযানের আগে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, সারা দেশে পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনা থেকে ৫ হাজার ৮২৯টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র লুট হয়। এর মধ্যে এখনো ২ হাজার ৬৬টি অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। গোলাবারুদের মধ্যে লুট হয় বিভিন্ন বোরের ৬ লাখ ৬ হাজার ৭৪২টি গুলি, যার মধ্যে এখনো উদ্ধার হয়নি ৩ লাখ ২০ হাজার ৬৬০টি। লুট করা ৩১ হাজার ৪৪টি কাঁদানে গ্যাসের শেলের মধ্যে ৮ হাজার ৯০৫টি এখনো উদ্ধার করা যায়নি। সাউন্ড গ্রেনেড লুট করা হয়েছিল ৪ হাজার ৬৯২টি। এর মধ্যে এখনো ২ হাজার ৫৭৬টি উদ্ধার করা যায়নি।

অভিযানে লুট হওয়া ও বৈধ অস্ত্র কতগুলো উদ্ধার ও জমা পড়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, সদর দপ্তরের অপারেশনস শাখা থেকে যৌথ অভিযানের তথ্য তাঁরা এখনো পাননি।

তবে পুলিশ সদর দপ্তরের আরেক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের লুট হওয়া সব ধরনের অস্ত্র এবং লাইসেন্স নেওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। মঙ্গলবার রাত থেকে জোরেশোরে যৌথ অভিযান শুরু হয়নি। আজ শুক্রবার থেকে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জোরালো অভিযান চালানো হবে।

বৈধ অস্ত্র জমা

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ হাজার ৮৪৫টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেওয়া হয়েছিল। গতকাল পর্যন্ত এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে জমা পড়ে ৯ হাজার ১৯১টি। ওই আট বিভাগে লাইসেন্স নেওয়া ১ হাজার ৬৫৪টি আগ্নেয়াস্ত্র গতকাল জমা পড়েনি।

বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার তালিকায় সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা রয়েছেন।