চট্টগ্রামে ব্যাংকের লকার থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণালংকার উধাও হওয়ার অভিযোগ করেছেন এক গ্রাহক। অভিযোগটি উঠেছে ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার শাখার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার রাত নয়টার দিকে নগরের চকবাজার থানায় এই অভিযোগ করেন রোকেয়া বারী নামের ওই নারী গ্রাহক। এতে ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিব উল্লাহ, চকবাজার শাখার ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম শফিকুল মাওলা চৌধুরী ও লকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউনুস।
রোকেয়া বারী চট্টগ্রামের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এম এম বারীর স্ত্রী। এ ছাড়া চট্টগ্রাম লেডিস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদিকা।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে এক গ্রাহক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যেহেতু এটি ব্যাংকের বিষয়, তাই অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তফসিলভুক্ত হওয়ায় এটি দুদকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রোকেয়া বারী অভিযোগে উল্লেখ করেন, ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রাম নগর চকবাজার শাখায় তাঁর একটি ব্যাংক হিসাব ও লকার রয়েছে। গত বুধবার তিনি কিছু গয়না আনতে ব্যাংকে যান। এরপর লকারের দায়িত্ব থাকা ব্যাংকের এক কর্মকর্তার চাবি দিয়ে লকার খুলতে গিয়ে দেখেন আগে থেকে এটি খোলা। পরে তিনি লকারে দেখেন ১০ থেকে ১২ ভরি স্বর্ণ ছাড়া বাকি ১৪৯ ভরি স্বর্ণালংকার নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি চকবাজার থানার ওসিকে জানান। ওসি পুলিশ ফোর্স নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে দেখেন ওই লকারে স্বর্ণালংকার নেই।
রোকেয়া আরও উল্লেখ করেন, ১৪৯ ভরি স্বর্ণালংকারের মধ্যে ৪০টি হাতের চুড়ি (৬০ ভরি), গলা ও কানের দুলের সেট ২৫ ভরি, গলার সেট ১০ ভরি, হাতের আংটি পাঁচটি ১৫ ভরি, গলার চেইন সাতটি ২৮ ভরি, কানের দুল ৩০ জোড়া ১১ ভরি।
রোকেয়া আক্তারের অভিযোগের বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) ও চকবাজার শাখার ব্যবস্থাপক এস এম শফিকুল মাওলা চৌধুরী গত রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বর্ণ মিসিংয়ের (উধাও) অভিযোগটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং অভিযোগের সত্যতা জানতে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
ব্যাংকে লকারের নিরাপত্তার বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘লকারের মূল ফটকের চাবি থাকে শুধু তাঁদের নির্ধারিত কর্মকর্তার কাছে। লকারের মূল চাবি গ্রাহক ছাড়া অন্য কারও কাছে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি গ্রাহকের কোনো মনোনীত প্রতিনিধিও লকার খুলতে পারেন না। প্রতিটি লকার খোলার জন্য দুটি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি গ্রাহক ও অপরটি ব্যাংকের নিকট থাকে। গ্রাহকের চাবি ব্যতীত শুধু ব্যাংকে রক্ষিত চাবি দিয়ে কোনোভাবেই লকার খোলা সম্ভব নয়। লকারে রক্ষিত মালামাল ও তার পরিমাণ সম্পর্কে একমাত্র গ্রাহক ব্যতীত ব্যাংকের কারও জানার সুযোগ নেই।