সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। ঢাকা, ১৭ এপ্রিল
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। ঢাকা, ১৭ এপ্রিল

মাদকের তিন ‘গডফাদারের’ বাড়ি–জমি ও কোটি টাকা জব্দ করেছে সিআইডি

মাদক কারবারে যুক্ত তিন ‘গডফাদারের’ প্রায় আট কোটি ১১ লাখ টাকা মূল্যের জমি ও বাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে তাঁদের গচ্ছিত এক কোটি এক লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় মাদক কারবারে যুক্ত ১০ গডফাদারের নাম-পরিচয় জানান সিআইডি প্রধান। তাঁরা হলেন কক্সবাজারের টেকনাফের নুরুল হক ভুট্টো, শফিক আলম ওরফে শফিক, নুরুল কবির, সিদ্দিক আহমেদ ও মো. ফজর আলী; চট্টগ্রামের শফিক আলম ওরফে শফিক ওরফে শফি; পাবনার শাহীন আলম; খুলনার শাহজাহান হাওলাদার; ঢাকার আদাবরের নুরুল ইসলাম ও টঙ্গী পূর্ব থানার পারুল।

সিআইডির প্রধান বলেন, আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে বাহক ও খুচরা কারবারি ধরা পড়লেও তাঁরা মাদকের গডফাদার। এর মধ্যে চারজন পলাতক ও দুজন জামিনে মুক্ত হয়েছেন। তাঁরা মিয়ানমার ও টেকনাফ থেকে মাদক এনে সারা দেশে চালান পাঠাতেন। তাঁদের কোনো পেশা না থাকলেও ব্যাংক লেনদেন অস্বাভাবিক ছিল।

মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে সিআইডি ৩৫টি মামলা তদন্ত করে মাদক মামলার মূল হোতা বা গডফাদারদের মাদক ব্যবসা থেকে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ (ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখা), ক্রয়কৃত জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পায়। এসব মামলার আসামিদের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

উল্লিখিত মামলাগুলোর মধ্যে তিন মামলায় গডফাদারদের ৯ একর ১৪ শতাংশ জমি ও ২টি বাড়ি ক্রোক এবং মাদক–সংক্রান্ত অর্থ পাচারের বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে রাখা ১ কোটি ১ লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা জব্দ করেছে বলে সিআইডির সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

মাদকের গডফাদার হিসেবে কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির নাম বারবার উঠে এসেছে। মাদক মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি বদি বা তাঁর ভাইয়ের মাদক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘মাদক মামলার মানি লন্ডারিং–সংক্রান্ত (অর্থ পাচার) বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আবদুস শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। বদির বিরুদ্ধেও যদি আমরা সাক্ষ্যপ্রমাণ পাই, তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। যার বিরুদ্ধেই তথ্যপ্রমাণ পাব, ধরা হবে, ছাড় দেওয়া হবে না।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, কক্সবাজারে পর্যায়ক্রমে মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা হবে। মাদক ব্যবসায় যাঁরা অবৈধভাবে সম্পদ ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন, তাঁদের অবৈধ সম্পদ আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারি কোষাগারে চলে যাবে।