মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও পাঁচজন চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা বলছে, গত রোববার খুলনার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে গ্রেপ্তার এই চিকিৎসকদের চারজনের পরিবারের দাবি, শুক্রবার তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় সিআইডি।
এর আগে ১৩ আগস্ট মেডিকেল ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ চিকিৎসকসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাঁদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিআইডি বলেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকায় পাঁচ চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মো. ইউনুচ উজ্জামান খান তারিম (৪০), লুইস সৌরভ সরকার (৩০), মুসতাহিন হাসান লামিয়া (২৫), শর্মিষ্ঠা মণ্ডল (২৬) ও নাজিয়া মেহজাবিন তিশা (২৪)।
এ বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) আজাদ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খুলনা থেকে রোববার যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁরা মেডিকেলে ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত।
তবে শর্মিষ্ঠা মণ্ডল, নাজিয়া মেহজাবিন, মুসতাহিন হাসান ও লুইস সৌরভ সরকারের পরিবার আজ দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছে, শুক্রবার সিআইডি পরিচয়ে তাঁদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকে তাঁদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
সিআইডির ভাষ্যমতে, মেডিকেল ভর্তির প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল হোতা জসিমকে গ্রেপ্তার করার পর তাঁর কাছ থেকে একটি ডায়েরি জব্দ হয়। সেখানে সারা দেশে মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম পাওয়া যায়। সেই তথ্যের ভিত্তির এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চিকিৎসকদের কেউ সরাসরি প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত। আবার কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষা দিয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছিলেন।
সিআইডি আরও বলেছে, ইউনুচ উজ্জামান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনি খুলনার থ্রি ডক্টরস নামে একটি মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টারের মালিক। দীর্ঘদিন ধরে মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত তিনি। লুইস সৌরভ খুলনা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ওই কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন তিনি; পাশাপাশি একটি বেসরকারি সংস্থায় চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। মুসতাহিন হাসান, শর্মিষ্ঠা মণ্ডল ও নাজিয়া মেহজাবিন খুলনা মেডিকেল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১১তম স্থান অর্জন করেছিলেন মুসতাহিন। তিনি থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। শর্মিষ্ঠা ও নাজিয়া অর্থের বিনিময়ে থ্রি ডক্টরসের ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।