চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দুজনকে শনাক্ত করার দাবি করেছে হাটহাজারী থানা-পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন রেখেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন এ তথ্য জানিয়েছেন। নিপীড়নের শিকার হওয়া ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেছেন, এ ঘটনায় পাঁচজন ছিলেন। তাঁদের কথাবার্তা ও পোশাক দেখে তাঁর মনে হয়েছে, সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন উপায়ে দুজনকে শনাক্ত করা গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে নাম–পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
গত বুধবার বিকেলে এ ঘটনায় মামলা করে যৌন নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রী। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারায় এ মামলায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার রাত সাড়ে নয়টায় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় গত বুধবার মামলা হয় হাটহাজারী থানায়। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। একপর্যায়ে গত বুধবার রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্রীরা।
কর্মসূচি অব্যাহত ছিল গতকাল বৃহস্পতিবারও। ক্যাম্পাসের দুই জায়গায় গতকাল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের ১২ শিক্ষক। বিক্ষোভ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও।
গতকাল বেলা ১১টায় ক্লাস বর্জন করে প্রতিবাদ শুরু করেন একটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। সেখানে শতাধিক শিক্ষার্থী বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে চলে আসেন শহীদ মিনার চত্বরে।
সেখানে মানববন্ধন শুরু হয়। এরপর মিছিল নিয়ে দলে দলে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন সেখানে। বেলা একটার দিকে হাজারখানেক শিক্ষার্থীর স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শহীদ মিনার চত্বর। তাঁরা এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন।
এদিকে ঘটনার পর ওই ছাত্রীর সঙ্গে কাউকে যোগাযোগ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে, ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা বাদে আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ঘটনার পর থেকে হলেও থাকছেন না তিনি।