সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে অপহরণ ও হত্যা মামলায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিমকে (মিন্টু) আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিমকে আজ আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন খুলনা অঞ্চলের চরমপন্থী নেতা শিমুল ভূঁইয়া। তাঁর জবানবন্দিতে আনোয়ারুল আজীম হত্যার সংশ্লিষ্টতা উঠে এসেছে। জবানবন্দিতে শিমুল ভূঁইয়া বলেছেন, গত ৫ অথবা ৬ মে আনোয়ারুলকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামানের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল করিমের হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়। আনারুল আজীমকে হত্যার বাস্তবায়ন সাপেক্ষে আর্থিক লেনদেনের কথা বলেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে ঝিনাইদহের আরেক আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহমেদ বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, আনোয়ারুল আজিমকে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ছবি আদান প্রদান করেছেন। গত ২৩ মে সাইদুল করিমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শিমুল ভুঁইয়াকে দেওয়ার কথা ছিল। আদালত রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের শুনানি নিয়ে আসামি সাইদুল করিমকে আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
ডিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, ধানমন্ডির ৩/এ এলাকায় আওয়ামী লীগের এক নেতার বাসার নিচ থেকে সাইদুল করিমকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।
গত ১২ মে কলকাতায় গিয়ে পরদিন নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন আনোয়ারুল আজীম। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল করিমসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলকাতা ও নেপালে গ্রেপ্তার হয়েছে আরও দুজন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, সোনা চোরাচালান নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে আনোয়ারুল আজীমকে কৌশলে কলকাতায় নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়রের ভাই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মো. আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহীন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, আক্তারুজ্জামান সংসদ সদস্যকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকায় খুনি ভাড়া করেছিলেন। হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা রাখেন খুলনা অঞ্চলের একসময়ের দুর্ধর্ষ চরমপন্থী নেতা শিমুল ভূঁইয়া। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদেই এ ঘটনায় ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিমের নাম আসে।