মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের মামলায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা আক্তার আজ রোববার এই আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম।
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জালিয়াতির মাধ্যমে চিকিৎসক সেজে মৃত ব্যক্তির সনদসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাঁর গত বৃহস্পতিবার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আজ রিমান্ড শেষে তাঁকে ঢাকার আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মিরপুর থানায় দায়ের করা মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। এই মামলায় তাঁকে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মিল্টন সমাদ্দারকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
মানব পাচার মামলার এজাহার অনুযায়ী, এম এ রাকিব নামের এক ব্যক্তি ২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি এলাকায় দুই বছরের একটি শিশুকে খুঁজে পান। পরে তিনি শিশুটিকে মিল্টন সমাদ্দারের প্রতিষ্ঠান চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’-এ দেন। বাদী কয়েক মাস পর শিশুটিকে দেখার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানে যান। একপর্যায়ে মামলার বাদীকে ওই প্রতিষ্ঠানে যেতে নিষেধ করেন মিল্টন সমাদ্দার। পরে বাদী জানতে পারেন, সেই শিশুকে পাচার করে দেওয়া হয়েছে।
তবে মিল্টন সমাদ্দারের আইনজীবীরা বলছেন, হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে।
প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত বুধবার রাতে ঢাকার মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মিল্টনের ভাষ্য, মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। সেখানে আশ্রয়হীন বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়া হয়। সম্প্রতি সাভারে জমি কিনে আশ্রয়কেন্দ্রের স্থায়ী নিবাস বানানো হয়েছে। মিল্টন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অসহায় বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে প্রচার চালান। এ-সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র দেন। ফেসবুকে তাঁকে অনুসরণ করেন ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ।
সম্প্রতি কিছুদিন ধরে মিল্টনের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছিল। মিল্টন ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তাঁর সঙ্গে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকজন তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।