গাজীপুরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিনজনে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম বিল্লাল হোসেন (৬০)।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-টঙ্গী বিভাগ) এন এম নাসিরুদ্দিন আজ বেলা ২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত হয়েছি। তবে তিনজনের মধ্যে শুধু একজনের লাশ টঙ্গী হাসপাতালে পাওয়া গেছে। তাঁর নাম আমিরুল ইসলাম বাচ্চু।’
নিহত বিল্লালের ছেলে আবদুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, তাঁর বাবা তাবলিগ জামাতের মূল ধারার, তিনি কোনো গ্রুপের নন। টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মারামারিতে তাঁর বাবা আহত হন। পরে ভোরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত বিল্লাল ফরিদপুর সদর কুঠিবাড়ি কমলাপুরের মৃত আবদুস সামাদ শেখের ছেলে। তিনি বাড্ডা বেরাইতে নিজ বাড়িতে থাকতেন তিনি। পেশায় তিনি তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী ছিলেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের আহত ৩৫ জন চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেলে এসেছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।
টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মো. আমিরুল ইসলাম বাচ্চু (৭০) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জে।
সংঘর্ষে তাইজুল ইসলাম নামের আরেক মুসল্লি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাওলানা সাদের অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম। তিনি বলেন, তাইজুলের বাড়ি বগুড়ায়।
ঢাকা মেডিকেল সূত্র জানায়, টঙ্গীর স্থানীয় হাসপাতাল হয়ে বিল্লালকে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, বিল্লালের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ৩৫ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৭ জন ভর্তি রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মেডিকেল চত্বরে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজীপুর পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী শুক্রবার থেকে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিন ইজতেমা করতে চান মাওলানা সাদের অনুসারীরা। মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা তাঁদের এখানে ইজতেমা করতে দিতে চান না। এ জন্য আগে থেকে ইজতেমা মাঠ দখলে নেন জুবায়ের অনুসারীরা। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে চারদিক থেকে মাঠে প্রবেশ করতে থাকেন সাদের অনুসারীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে মাঠ ছেড়ে দেন জুবায়ের অনুসারীরা।