রাষ্ট্রমালিকানাধীন আট ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হয়েছেন তাঁরা।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বহু শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে জড়ো হন। পুলিশ সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দিকে যান।
পরীক্ষার্থীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। প্রতিবাদ জানান। স্লোগান দেন।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া রোহিদুল ইসলাম বলেন,‘ কর্তৃপক্ষ একটি কেন্দ্রে সমস্যার কথা বলছে। কিন্তু এই পরীক্ষার সার্বিক চিত্র সব জায়গায়তেই খারাপ ছিল। শুধু অব্যবস্থাপনার কথা বললেও কম হয়। কোনো কোনো পরীক্ষার্থী প্রশ্ন বাইরে নিয়ে গেছে। দেরিতে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে আগে কোনো কেন্দ্রে পরে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় কোনোভাবেই পরীক্ষা দিয়ে প্রকৃত মেধা যাচাই করা সম্ভব না। পরীক্ষা বাতিলের দাবি করছি।’
পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় নানা অব্যবস্থাপনার ছবি দেখান। ফেসবুক ও গণমাধ্যম থেকে পাওয়া ছবি দেখিয়ে তাঁরা পরীক্ষা নতুন করে নেওয়ার দাবি জানান।
গত শুক্রবার আট ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রশ্নপত্র ও বসার জায়গা না পেয়ে শাহ আলী মহিলা কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধও করেছেন। ওই কেন্দ্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০ জানুয়ারি। গত শুক্রবার সারা দেশে মোট ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাইরের ফটকে রোল নম্বর টাঙানো থাকলেও অনেক কেন্দ্রে পরীক্ষার হলে আসনবিন্যাস ঠিকমতো ছিল না। যে যাঁর মতো বসেছেন। দুজনের ছোট বেঞ্চে বসতে হয়েছে চার থেকে ছয়জনকে। পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পরও অনেক কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র যায়নি। অনেক কেন্দ্রে ছাপা প্রশ্নপত্র এতটাই অস্পষ্ট ছিল যে তা পড়তে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষার কেন্দ্রে মুঠোফোন নিষিদ্ধ থাকলেও অধিকাংশ কেন্দ্রেই পরীক্ষার্থীরা তা নিয়ে ঢুকেছেন। পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকে ফেসবুকে চাকরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে পরীক্ষার অব্যবস্থাপনা নিয়ে ছবি আর ভিডিও আসা শুরু করে।
গত বছর সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষাসহ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা না করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার চেম্বার বিচারপতি সে আদেশ স্থগিত করেন। এই আদেশের ফলে ওই তিন ব্যাংকসহ আট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার (সাধারণ) ১ হাজার ৬৬৩টি শূন্য পদে ২ লাখ ১৩ হাজার ৫২৫ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন।