‘আমি আমার বাবাকে ফিরে পেতে চাই’—এমন আকুতি জানিয়েছে কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে সবুজের মেয়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বাবার ফেরার প্রতীক্ষায় সে। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে সাজ্জাদ হোসেনের পরিবার। সেখানেই এই আকুতি জানায় সুমাইয়া।
সুমাইয়ার সঙ্গে ছিল তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস জিনিয়া, দাদি শাহিদা বেগম, ভাই শাহেদ হোসেন। শাহেদ উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, জেলা আওয়ামী লীগের অন্তঃকোন্দলের কারণে সাজ্জাদ হোসেন নিখোঁজ রয়েছেন। র্যাব দিয়ে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার গাজীপুরের মাওনার ড্রিম স্কয়ার রিসোর্ট থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে যান র্যাব-১–এর সদস্যরা। আজ প্রায় তিন বছর চার মাস হতে চলেছে সাজ্জাদ হোসেনের দেখা মেলেনি। কোনো সন্ধানও নেই। ওই ঘটনার পর বেশ কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবারটি। কুষ্টিয়াতেও সংবাদ সম্মেলন করা হয়। তারা জানতে পেরেছি, রিসোর্টের মালিক মনিরুজ্জামানকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওই রিসোর্ট থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান লাবু ও সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আখতারুজ্জামান লাবু ফিরে এলেও সাজ্জাদের বিষয়ে তিনি কিছু বলছেন না।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার সময় সবুজ নামের একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সবুজ জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। ওই ঘটনায় সাজ্জাদ হোসেনকে আসামি করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় র্যাব।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ওপর মহল থেকে বলেছে তিন বছর পরে হয়তো ফিরে আসতে পারে। অন্তঃকোন্দলের কারণে নিখোঁজ তিনি। এ সময় সাংবাদিকেরা ‘ওপর লেভেল’ কারা—জানতে চাইলে এ বিষয়ে কিছু বলেনি পরিবারটি। নিখোঁজের বিষয়ে আদালতে রিটও করে তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের পরিচালক (গণমাধ্যম) মুফতি মাহমুদ খান প্রথম আলোকে বলেন, এই ঘটনার পর থেকে প্রতিবছর সাজ্জাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ব্রিফিং করা হয়। র্যাব–১–এর কোনো অভিযান হয়নি। তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।