মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পানিখাওরি এলাকায় বন বিভাগের নার্সারির ৩০ হাজার চারাগাছ দুর্বৃত্তরা নষ্ট করে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পানিখাওরি এলাকাটি বন বিভাগের নলডরি বিটে পড়েছে। এর পাশেই লবণছড়া ও বেগুনছড়া পুঞ্জিতে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী খাসিয়া সম্প্রদায়ের কিছু পরিবার বাস করে। পান চাষ করে তাদের জীবিকা চলে। বন বিভাগ চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পানিখাওরি এলাকায় প্রায় ৫০ একর ফাঁকা জমিতে সামাজিক বনায়নের আওতায় বাগান সৃজনের সিদ্ধান্ত নেয়। সে উদ্দেশে মাসখানেক আগে সেখানে অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছের নার্সারি করা হয়। ৩০ হাজার পলিথিনের প্যাকেটে চারা উৎপাদন করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে কয়েকজন উপকারভোগী নার্সারিতে পরিচর্যার কাজে যান। এ সময় তাঁরা সব চারাগাছ তছনছ অবস্থায় দেখতে পান। এ ছাড়া চারাগাছে ছায়া প্রদানের জন্য ছন-বাঁশ দিয়ে নির্মিত ছাদও ভাঙা দেখেন। উপকারভোগীরা বিষয়টি মুঠোফোনে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জানান। এরপর বন বিভাগের কর্মকর্তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মানিক রঞ্জন দে গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটতে পারে। কে বা কারা এটা ঘটিয়েছে বোঝা যাচ্ছে না। তবে পাশের লবণছড়া পুঞ্জির মন্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) দিল বাহাদুরের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ রয়েছে। পুঞ্জির বাইরের কিছু লোকের যোগসাজশে দিল বাহাদুর পান চাষের জমি বাড়ানোর জন্য বন বিভাগের জমি অবৈধভাবে দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। নার্সারি করার সময় তিনি নানাভাবে বাধা দেন। এ ছাড়া হুমকি-ধমকিও দেন। এ ব্যাপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা ২১ মার্চ কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, নার্সারির সব চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দেবেন।
লবণছড়া পুঞ্জির মন্ত্রী দিল বাহাদুর তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, পুঞ্জিতে ২৪টি খাসিয়া পরিবার থাকে। বন বিভাগ যে জমিতে নার্সারি করেছে, সেখানে তাঁদের পানের জুম পড়েছে। বন বিভাগের লোকজন নির্মমভাবে জুমের পানসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নার্সারি স্থাপন করেছে। খাসিয়ারা বনকে রক্ষা করে। হয়রানির উদ্দেশ্যে তাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে।
কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।