বর্জ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত বড় গাড়িগুলো সড়কের দুটি লেন দখল করে আড়াআড়ি করে রাখা। বাসাবাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের ভ্যানগুলোও ফুটপাতের ওপরে রাখা। গাড়ি মেরামতের ওয়ার্কশপও গড়ে তোলা হয়েছে ফুটপাতের ওপর।
নতুন বাজার বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় সড়কের একটি বিরাট অংশ ময়লার গাড়ির দখলে থাকায় প্রায়ই রাস্তার ওই অংশটিতে যানজটের সৃষ্টি হয়। ফুটপাতে রেখে দেওয়া আবর্জনা সংগ্রহের ভ্যানগাড়ির কারণে বন্ধ হয়ে থাকে ফুটপাত। পথচারীদের হাঁটতে হয় ঝুঁকি নিয়ে মূল সড়কে নেমে।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, প্রগতি সরণিতে নতুন বাজার থেকে নর্দ্দার দিকে কিছুদূর সামনে রাস্তার পশ্চিমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)। এর পাশেই ফুটপাত বন্ধ করে নির্মিত ডিএনসিসি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের আধা পাকা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যালয়। এর সামনেই মূল সড়কে প্রায় দুই লেন দখলে নিয়ে নয়টি বড় গাড়ি আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা। এসব গাড়িতে করে এসটিএসের আবর্জনা গাবতলী এলাকায় পরিবহন করা হয়। ট্রাকে বর্জ্য ওঠানোর কাজে ব্যবহৃত একাধিক গাড়িও সড়কের ওপরে রাখা। এ ছাড়া ফুটপাতে রাখা হয়েছে প্রায় ৩০টি ভ্যান। এগুলো বাসাবাড়ির আবর্জনা সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হয়।
নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা সেলিম মিয়া বলেন, সড়কে এলোমেলোভাবে ময়লার গাড়ি রেখে দেওয়া হয়। সারা দিনই গাড়িগুলো রাস্তায় থাকে। এতে প্রায় সময় ওই অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসটিএসের অংশটুকুতে ফুটপাত নেই। এসটিএসের পেরিয়ে নর্দ্দার দিকে ফুটপাত থাকলেও সেখানে রাখা আবর্জনা সংগ্রহের ভ্যানের কারণে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে মূল সড়কে নেমে চলতে হয়।
কূটনৈতিক এলাকায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন মাহরীন হোসেন। বাসা ভাটারার কোকাকোলা এলাকায়। কাজ শেষে হেঁটেই বাড়ি ফেরেন তিনি। মাহরীন বলেন, ময়লা এনে এসটিএসে রাখার পরে ভ্যানগুলো ফুটপাতে ফেলে রাখা হয়। বিকেলের দিকে দেখা যায়, ওই জায়গায় অর্ধশতাধিক ভ্যান জড়ো হয়ে যায়। তখন ফুটপাত ভরে সড়কেও রাখা হয় ভ্যান। এতে চলাচল করতে সমস্যা হয়।
তবে ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ (মহাখালী, গুলশান)–এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ বলছে, সেখানে গাড়ি রাখার কথা নয়। এই বিষয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে কোনো আলাপ করেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়ম ভেঙে এভাবে সড়কে বর্জ্য পরিবহনের গাড়ি রাখে।
ওই অঞ্চলের সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আনিচুল হক বলেন, ‘মানুষের চলাচল বিঘ্নিত করে রাস্তায় গাড়ি রাখতে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার সতর্ক ও বারণ করেছি।’ এ বিষয়ে ঠিকাদারদের সতর্ক করে দেবেন বলেও জানান তিনি।
ওই এসটিএস থেকে বর্জ্য সংগ্রহের কাজ করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাল্টি ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা হাসান মাহমুদ বলেন, গাড়িগুলোর রাখার জায়গা নেই। তাই অস্থায়ীভাবে ওই স্থানে রাখা হচ্ছে। এতে বর্জ্য পরিবহনের কাজে সুবিধা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা এসটিএসের কাছেই কোথাও জায়গা খুঁজছি। জায়গা পেলেই গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে আপাতত যাতে সাধারণের সমস্যা না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হবে।’