সোহেল রানাকে ফেরত চেয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ চিঠি পাঠানো হয়। এখনো কোনো চিঠির জবাব পাওয়া যায়নি।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের ঘটনায় আলোচিত রাজধানীর বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক শেখ সোহেল রানাকে ভারত থেকে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের ভারতের দিল্লির ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোকে (এনসিবি) তৃতীয় দফায় চিঠি দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
এদিকে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সোহেল রানাসহ কয়েকজনকে আসামি করে ১৩ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় আরও একটি মামলা করেছেন এক গ্রাহক। এ নিয়ে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান ও কোতোয়ালি থানায় চারটি মামলা হলো। এর মধ্যে গুলশান থানার দুই মামলার আসামি সোহেল রানা।
গত আগস্টের মাঝামাঝিতে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হওয়ার পর সোহেল রানা আলোচনায় আসেন। ওই মামলায় তাঁর বোন ই-অরেঞ্জের অন্যতম মালিক সোনিয়া মেহেজাবিন ও ভগ্নিপতি মাসুকুর রহমান আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান। এরপর ২ সেপ্টেম্বর ই-অরেঞ্জের এক গ্রাহক প্রায় ৮৯ লাখ টাকা প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে শেখ সোহেল রানা ও নাজনীন নাহারকে (বীথি) আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলার পর ওই রাতেই সোহেল রানা দেশ থেকে পালিয়ে যান। ৩ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে সে দেশের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে গ্রেপ্তার হন তিনি। এরপর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত মঙ্গলবার ঢাকায় এনসিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে গ্রেপ্তার সোহেল রানাকে ফেরত চেয়ে এ নিয়ে তিন দফায় দিল্লিতে এনসিবিকে চিঠি দেওয়া হলো। সর্বশেষ ১৮ সেপ্টেম্বর সোহেল রানাকে ফেরত চেয়ে তাঁরা চিঠি পাঠান। কিন্তু এসব চিঠির এখনো কোনো জবাব পাননি তাঁরা। এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সোহেল রানাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট গুলশান থানার পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে সে দেশে সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় বিচার শেষ হওয়ার আগে তাঁকে ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে হচ্ছে।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিভিন্ন সূত্র থেকে সোহেল রানার চার স্ত্রী থাকার কথা বলা হলেও তদন্তে তাঁর প্রথম স্ত্রীর বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে। মামলায় ই-অরেঞ্জের নাজনীন নাহারকে তাঁর চতুর্থ স্ত্রী উল্লেখ করা হলেও তিনি সোহেল রানার স্ত্রী নন। এই নাজনীন নাহার ও মামলার আরেক আসামি বীথি আক্তারকে গ্রেপ্তার করা গেলে সোহেল রানার অর্থসম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম ইতিপূর্বে সোহেল রানার অর্থসম্পদের বিস্তারিত তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজধানীর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ (বিআরটিএ) বিভিন্ন সংস্থায় চিঠি দিয়েছেন।