যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট হুন্ডির মাধ্যমে ২২৭ কোটি টাকা সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন। পাচার করা টাকার বড় অংশই অর্থই তিনি দেশটির জুয়ার আসর ‘মেরিনা বে-স্যান্ডস’ ক্যাসিনোতে খরচ করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার তদন্ত করছে সংস্থার উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বাধীন একটি অনুসন্ধানকারী দল।
হুন্ডির মাধ্যমে ২২৭ কোটি টাকা সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন সম্রাট। ওই টাকার বড় অংশ ‘মেরিনা বে-স্যান্ডস’ ক্যাসিনোতে উড়িয়েছেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর পালিয়ে যান সম্রাট ও আরমান। পরে ওই বছরের ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সম্রাটের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় ১৯৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা এই মামলার অপর আসামি সম্রাটের সহযোগী এনামুল হক ওরফে আরমান। মামলায় বলা হয়, ২০১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত সম্রাট শুধু সিঙ্গাপুরেই গেছেন ৩৫ বার। এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় তিনবার, দুবাইতে দুবার ও একবার হংকংয়ে গেছেন। একই সময়ে আরমান সিঙ্গাপুরে গেছেন ২৩ বার। তাঁর সহায়তায় সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় ১৯৫ কোটি টাকা পাচার করেছেন সম্রাট।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর পালিয়ে যান সম্রাট ও আরমান। পরে ওই বছরের ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ছিলেন সম্রাট। সহসভাপতি ছিলেন আরমান। তিনি চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করতেন।
গ্রেপ্তারের পর ক্যাঙারুর চামড়া রাখার অভিযোগে করা মামলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাট ও আরমানকে প্রথমে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠান। পরে তাঁর বিরুদ্ধে রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা করেছে। গ্রেপ্তারের পর প্রথম কিছুদিন কারাগারে থাকার পর অসুস্থতার কথা বলে তিনি এখন হাসপাতালে থাকছেন।
দুদকের সচিব মো. দিলোয়ার বখত সাংবাদিকদের বলেন, সম্রাটের বিরুদ্ধে করা মামলায় দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাচ্ছেন অবৈধ সম্পদ ও অর্থ পাচারের বিষয়ে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।