রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার ওপর প্রতিবেদন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল রানা ও ক্যামেরাপারসন নাজমুল হোসেন। আজ মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় মো. আসিফের নেতৃত্বের এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সোহেল রানা। এ ঘটনায় তিনি মুগদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
হাসপাতালের পরিচালক আমিন আহমেদের সঙ্গে তাঁর কক্ষে দেখা করে বের হয়ে যাওয়ার পর এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান সাংবাদিক সোহেল রানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিনের কাজের অংশ হিসেবে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে অফিস থেকে ক্যামেরাপারসন নাজমুলকে সঙ্গে নিয়ে সকাল ১০টার দিকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে যাই। সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি নিতে হাসপাতালের পরিচালক আমিন আহমেদের সঙ্গে কথা বলি। কত সময় কাজ করব, এ বিষয়ে তিনি জানতে চান এবং ভিডিও করার আগে পরিচালক আমাকে বন্ড সই দিতে বলেন, তা ছাড়া অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানান। এ কথা শুনে বের হয়ে যাই। বের হওয়ার সময় হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীসহ কয়েক জন ওয়ার্ডবয় আমাদের সঙ্গে ছিল। বাইরে এসে কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলার সময় এক ওয়ার্ডবয়ের নেতৃত্বে ৮-১০ জন আমাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় নেতৃত্ব দেওয়া ওই ওয়ার্ডবয় আমাকে বলে, “তুই এখানে কী করিস? তোদের না রিপোর্ট করতে নিষেধ করা হইছে।” এরপর আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে তারা। একপর্যায়ে আমাকে টেনে হিঁচড়ে আমাদের গাড়ির কাছে নিয়ে যায়। তারা আমাদের ক্যামেরার লেন্স, লেন্সহুড, আল্ট্রা লাইট ও ব্যাটারি ভেঙে ফেলে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে যায়। পরে জানতে পারি ওই ওয়ার্ডবয়ের নাম মো. আসিফ। হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে যাওয়ার আগে তাঁকে পরিচালকের কক্ষের বাইরে দেখেছিলাম।’
ওই ওয়ার্ডবয় খুবই মনোযোগ দিয়ে কাজ করে বলে দাবি করেন হাসপাতালের পরিচালক আমিন আহমেদ। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে লোকবল-সংকট রয়েছে। দুই হাজার কর্মচারীর জায়গায় মোট জনবল এখন ৬৫০ জন। তাই আসিফ আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে। সে আমার কক্ষে আজ সকালে আসেনি। তবে সে খুব রেগুলার সিরিয়াসলি কাজ করে।’
এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান আমিন আহমেদ।
হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান মুগদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।
বিকেল পাঁচটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় হামলার অভিযোগে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।