১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। র্যাব এই অভিযান শুরু করে। পরে পুলিশও যোগ দেয়। প্রথম থেকেই বলা হচ্ছে, এই অভিযানের উদ্দেশ্য সারা দেশে ক্যাসিনো ব্যবসা বন্ধ করা। ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতারাই মূলত এই ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রথম দিন ফকিরাপুরের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। এর পরই গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্লাবটির সভাপতি খালেদ হোসেন ভুঁইয়াকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করেন, ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট।
ইতিমধ্যে এই অভিযান শুরুর পর যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু সম্রাট এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযান শুরুর প্রথম তিন দিন তিনি দৃশ্যমান ছিলেন। ফোনও ধরতেন। কিন্তু এখন তিনি কোথায় আছেন, তা তাঁর সংগঠনের কেউ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।
অভিযান শুরুর পর কয়েক দিন কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থানের পর অন্য স্থানে চলে গেছেন সম্রাট। তিনি কোথায় গেছেন, সে সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে পারেননি।
ভূঁইয়া ম্যানশনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সম্রাট অবস্থানকালে শতাধিক যুবক তাঁকে পাহারা দিয়ে রাখছিলেন। সেখানেই সবার খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন পদস্থ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সম্রাট পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন। তিনি ঢাকাতেই আছেন। সম্রাটের বিরুদ্ধে আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না? জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, সবাই সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছেন।
যুবলীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সম্রাট কিছুটা চাপে আছেন। তাঁকে শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হবে কি না, বিষয়টি এখনো তিনি নিশ্চিত নন। তবে তাঁকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে চাপ বাড়ছে। এ কারণে নিজেকে আড়ালে রেখেছেন তিনি।
ক্যাসিনো-কাণ্ডে অভিযুক্ত সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গত রোববার এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সম্রাটের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।