শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফেরত ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। এই ইউনিটের প্রধান এবং ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম আজ শনিবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এই ১১ জন শ্রমিকের সবাই শ্রীলঙ্কার ইব্রাহিম ইনসাফ আহমেদের তামার ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। শ্রীলঙ্কায় ২১ এপ্রিলের ভয়াবহ সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আত্মঘাতী হামলাকারী হিসেবে উঠে আসে দেশটির কোটিপতি ব্যবসায়ী ইব্রাহিম ইনসাফ আহমেদের পরিবারের নাম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ওই হামলার ঘটনায় ইব্রাহিম ইনসাফ মারা গেছেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিয়েছে। ওই ফ্যাক্টরিতে যাঁরা সাধারণ শ্রমিকের কাজ করতেন শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিদেশিদের নিজ নিজ হাইকমিশনের কাছে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দেশে ফেরত আসেন এই ১১ শ্রমিক।
ইব্রাহিম ইনসাফের সঙ্গে এই শ্রমিকদের যোগাযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁরা একেবারেই সাধারণ শ্রমিক ছিল । দেশে তাঁদের ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বাংলাদেশও জঙ্গি হামলার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, সারা বিশ্বই ঝুঁকিতে আছে। বিশ্বের কোনো দেশের পক্ষেই বলা সম্ভব না যে এখানে হামলা বা সহিংসতা হবে না। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে আমরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি তবে সুনির্দিষ্ট কোনো হামলার পরিকল্পনা বা ষড়যন্ত্রের বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই।
মনিরুল বলেন, এখানে যেসব জঙ্গি দলগুলো ছিল তাঁদের ঘাঁটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে ও দলগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে তাঁদের অনুসারীরা আছে। তারা শ্রীলঙ্কার ঘটনাতে নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের ঘটনার পর তাঁদের প্রতিশোধ নেওয়ার যে স্পৃহা তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও জঙ্গিদের নিজস্ব যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে তারা বিভিন্নভাবে আলোচনা করেছে যে এই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়া উচিত, হামলা করা উচিত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তাঁদের (জঙ্গিদের) কাঠামো সুবিন্যস্ত নয় এবং হামলার জন্য যেসব সরঞ্জাম প্রয়োজন তা সময় সাপেক্ষ এবং কিছু ক্ষেত্রে কঠিন। তারা যাতে হামলা করতে না পারে সে জন্য নিউজিল্যান্ডের ঘটনার পর থেকে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছি।' তিনি অনুরোধ করেন কেউ সন্দেহজনক কিছু দেখলে যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানায়।