ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আলোচিত ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়েছে। প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী শামীম আল মামুন।
এর আগে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের ৭ এপ্রিল গাজীপুরের গাছা থানায় রফিকুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গত বছরের ৭ এপ্রিল নেত্রকোনায় তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে চারটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। মামলার এজাহারে রফিকুলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজারের কলমেশ্বর এলাকায় একটি কারখানা চত্বরে গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে সরকারকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম মাদানী। ওই ঘটনায় ৭ এপ্রিল দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে গাছা থানায় র্যাব-১-এর ডিএডি আবদুল খালেক বাদী হয়ে মামলা করেন।
এ ছাড়া রাজধানীর মতিঝিল থানায় রফিকুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে। মামলায় অভিযোগ, তিনি ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা শেয়ার হওয়ায় তাঁদের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৫ মার্চ বিক্ষোভকালে ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি। ওই সময় বিক্ষোভ ও হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল। রফিকুল ইসলাম মাদানীর ওয়াজে সহিংসতার উসকানি ছিল বলে দাবি করেছে র্যাব।
রফিকুল ইসলাম মাদানীর বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা গ্রামে। ইসলামি দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় রফিকুলের বয়স ২৭ বছর হলেও আকার-আকৃতির জন্য তাঁকে ‘শিশুবক্তা’ বলে ডাকেন তাঁর ভক্তরা।