নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ছয় বছরের এক শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে লোহাগড়া পৌর এলাকার সিঙ্গা গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় একটি বাগানের পাশে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা ও মামাকে আটক করেছে পুলিশ।
শিশুটির নাম রমজান। সে সিঙ্গা-মশাঘুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে লোহাগড়া পৌর এলাকার সিঙ্গা গ্রামের ভ্যানচালক ইলু শেখের ছেলে। তবে সে একই গ্রামে নানার বাড়িতে থাকত। নানার নাম হাবিবুর শেখ।
পরিবারের সদস্য, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইলু শেখ বিবাহিত, ছেলেমেয়ে আছে। সাত বছর আগে গ্রামের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়ে মারিয়ার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মারিয়া। তখন সামাজিক চাপে তাঁকে বিয়ে করেন ইলু শেখ। জন্ম হয় রমজানের। রমজানকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই ছিলেন মারিয়া। কিছুদিন পর মারিয়াকে তালাক দেন ইলু। মারিয়ার পরিবার আদালতে মামলা করে ছেলের ভরণ-পোষণের দাবি করে। আদালতের রায়ে নানাবাড়িতে প্রতি মাসে ছেলের ভরণ-পোষণের টাকা দিতেন ইলু শেখ। সব শেষে প্রতি মাসে দিতে হতো তিন হাজার টাকা। কয়েক মাস টাকা বাকি হওয়ায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় কারাগারে যেতে হয় ইলু শেখকে। তিন বছর আগে হৃদ্রোগে মারিয়া মারা যাওয়ার পরও নানার বাড়িতে ছিল রমজান। অনাদরে, অযত্নে পুষ্টিহীনতায় ভুগছিল শিশুটি। চার লাখ টাকা দিলে ভরণপোষণের টাকা দেওয়া লাগবে না, সম্প্রতি ইলু শেখকে এমন প্রস্তাব দেন মামা ইউছুফ শেখ।
নানা হাবিবুর শেখ জানান, গতকাল সকালে স্কুলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি রমজান। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে বিকেলে তার লাশ পাওয়া যায়।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকাররম হোসেন বলেন, ‘শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাবা ইলু শেখ ও মামা ইউছুফ শেখকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ইলু শেখের পরিবারের সবাই পালিয়েছে। বাড়িতে তালা দেওয়া। আজ বৃহস্পতিবার সকালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।