রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়শা সিদ্দিকাকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে
রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়শা সিদ্দিকাকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে

রিফাত হত্যায় স্ত্রী আয়শাসহ ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

  • হত্যাকাণ্ড ২০১৯ সালের ২৬ জুন, পরের দিন মামলা

  • মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের খালাস

  • আয়শাকে পাঠানো হলো কারাগারে

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় উপলক্ষে বুধবার সকালে বাবার সঙ্গে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যান রিফাতের স্ত্রী ও মামলার ৭ নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা ওরফে মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার বাকি চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি পাঁচ আসামি হলেন রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৩), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত (১৯), রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয় (২২) ও মো. হাসান (১৯)। আর খালাস পেয়েছেন রাফিউল ইসলাম, মো. সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন ও মো. মুসা। মুসা পলাতক আছেন।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়শা সিদ্দিকাকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকাসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিচারকাজ গত ১৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এদিন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর (আজ) তারিখ ধার্য করেন।

রায় ঘিরে সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আজ সকাল ৭টার দিকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের নিরাপত্তায় আদালত ভবনে আসেন মামলার বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের তল্লাশি করে আদালত ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। রায় ঘিরে মঙ্গলবার রাত থেকেই বরগুনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে পুলিশ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) টহল জোরদার করা হয়েছে।

সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রায়কে কেন্দ্র করে চারটি স্থানে পুলিশি তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। স্থানগুলো হলো—বরগুনা মহিলা কলেজ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের, হাসপাতাল সড়ক ও সার্কিট হাউস সড়ক। তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যরা সন্দেহজনক যানবাহন তল্লাশির পাশাপাশি জনসাধারণের গতিবিধির ওপর নজর রাখছেন।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ের পর আসামিদের আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়। বুধবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে

গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে তাঁর স্ত্রী আয়শার সামনে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। এরপর তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেদিন বিকেলে তিনি মারা যান। পরের দিন ২৭ জুন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান সাক্ষী করা হয় আয়শাকে। পরে অভিযোগপত্রে ৭ নম্বর আসামি হিসেবে নাম আসে তাঁর। গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৭৬ জন সাক্ষ্য দেন।

রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড