রাজশাহীতে আহলে হাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশের আমির আসাদুল্লাহ আল গালিব ও তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন ভবন’ দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গালিবের নেতৃত্বে তাঁর সমর্থক মাদ্রাসার ছাত্র ও ক্যাডাররা নগরের কাজলা এলাকায় অবস্থিত ওই ভবনের তালা ভেঙে ভবনটি দখলে নিয়ে ঘুমন্ত ছাত্রদের বের করে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভবনের তত্ত্বাবধায়ক রেজাউল করিম বলেন, হাদীছ ফাউন্ডেশনের পাঁচতলা ভবনে তাঁর তত্ত্বাবধানে একটি ছাত্রাবাস রয়েছে। সেখানে প্রায় ৪০ জন ছাত্র ভাড়ায় থাকেন। মঙ্গলবার রাতে ছাত্ররা ঘুমিয়ে পড়লে গালিবের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি ট্রাকে করে এসে ভবনের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ফেলেন। এরপর ভেতরে ঢুকে ভবনের বিভিন্ন তলায় অবস্থান নেন। এ সময় তাঁকেসহ ফাউন্ডেশনের কর্মচারী ও ছাত্রদের বের করে দেওয়া হয়।
হাদীছ ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার তাওহীদ ট্রাস্টের মালিকানাধীন রাজশাহী নগরের মতিহার থানাধীন কাজলায় অবস্থিত পাঁচতলা হাদীছ ফাউন্ডেশন ভবনটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। ভবনটির মালিকানার বিষয়ে রাজশাহীর যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে ঢাকার তাওহীদ ট্রাস্টের সঙ্গে আসাদুল্লাহ আল গালিবের মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট হাইকোর্টের অবকাশকালীন দেওয়ানি বেঞ্চের বিচারপতি শরীফ উদ্দীন চাকলাদার ও বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ তাওহীদ ট্রাস্টের পক্ষে ছয় মাসের জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একই সঙ্গে তাওহীদ ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষকে কোনোরূপ ভয়-ভীতি প্রদর্শন, বলপূর্বক অনুপ্রবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বিঘ্ন সৃষ্টি না করার জন্য গালিবকে নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া তাওহীদ ট্রাস্টের পক্ষে কেন স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না, এই মর্মে গালিবকে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেন।
আসাদুল্লাহ আল গালিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুখপাত্র সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাতে নয়, চার মাস আগে থেকেই ওই ভবন তাঁদের দখলে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভুল তথ্য দিয়ে ওরা (তাওহীদ ট্রাস্ট) হাইকোর্ট থেকে এই আদেশ নিয়েছে।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, ‘ভবন দখলের বিষয়টি শুনেছি, তবে দুপুর পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তাওহীদ ট্রাস্টের পক্ষে মামলার বাদী আবুল খায়ের মোহাম্মদ বাশীর বলেন, ‘আমরা আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছি।’