রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাসা থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশু দুটির নাম জান্নাত (১১) ও আলভি (৮)। আজ শনিবার সকালে ৩৯৭ নম্বর দক্ষিণ গোড়ানের মোল্লা ভবনের চারতলা থেকে এই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে খিলগাঁও থানার পুলিশ। তাদের মাকে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দুই সন্তান, স্বামীসহ মোল্লা ভবনের চারতলায় ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন আরিফুন নেছা ওরফে পপি (৩৫)। তাঁর স্বামী মোজাম্মেলক হক বিপ্লব ব্যবসা করেন। গতকাল শুক্রবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হয়। এরই জের ধরে পপি তাঁর দুই মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। মা আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়েছেন। তিনি পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পপির ভাই অনীকের ভাষ্য, ছয়তলা ভবনটিতে চব্বিশটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে চারতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন বিপ্লব ও তাঁর পরিবার। গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায়। বিপ্লব ঢাকার বাইরে ব্যবসা করেন। এ জন্য বাইরে থাকতে হয়। অন্যদিকে, পপি দুই মেয়েকে নিয়ে ফ্ল্যাটে থাকতেন। তাঁদের বড় মেয়েটি ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। একই স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে পড়ত ছোটটি।
প্রতিবেশী মাহবুব হোসেনের ভাষ্য, ‘এই পরিবারের লোকজন অন্যদের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না। গৃহবধূ পপি পর্দানশিন ছিলেন। তিনি মেয়েদের স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। প্রায়ই বাচ্চাদের মারধর করতেন তিনি। বাইরে থেকে তা বোঝা যেত। আজ সকালে পপির বাবা খুব জোরে বাইরে থেকে দরজা খোলার জন্য ধাক্কা দিচ্ছিলেন। কিন্তু দরজা খোলা হচ্ছিল না। পরে আমরাও যাই। এ সময় ভেতর থেকে দরজা খুলে দেওয়া হয়।’
ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইম সিন আলামত সংগ্রহ করেছে। ওই ভবনে বাইরের লোকজনদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পপিকে দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। তাঁর শরীরের ১৮ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে বলে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া।