রাঙামাটির লংগদু উপজেলার আটরকছড়া ইউনিয়নের বান্দরতলাছড়া গ্রামে জনসংহতি সমিতির (এম এন লারমা) এক কর্মীকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। আজ রোববার সকালে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম পান্দব চাকমা (৪০)। এ ঘটনার জন্য জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করেছে জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা)। তবে জেএসএস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পাহাড়ে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে। আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা), ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক রয়েছে। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় এই চার দলের সক্রিয় কার্যক্রম পরিচালনা করা আসছে। ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে অব্যাহত ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত চলে আসছে। তখন থেকে এ পর্যন্ত ৬৯ জন নিহত হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার উল্টাছড়ি ইউনিয়নের মরাটিলা গ্রামের ইউপিডিএফের কর্মী মাহেন ত্রিপুরাকে (৩০) গুলি করে হত্যা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লংগদু উপজেলায় আটরকছড়ি ইউনিয়ন ও বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম বান্দরতলাছড়া। এই এলাকায় অধিকাংশ সময় জনসংহতি সমিতির (এম এন লারমা) কর্মীরা থাকত। আজ সকাল ১০টার দিকে সাংগঠনিক কাজ করতে বান্দরতলাছড়া গ্রামে যান এম এন লারমার পান্দব চাকমা ও অর্জন চাকমা ওরফে নির্ভীক চাকমা (২৭) । গ্রামে কাজ শেষে অন্য এক গ্রামে যাওয়ার জন্য রওনা দেন। এমন সময় একদল দুর্বৃত্ত তাঁদের ওপর ব্রাশফায়ার করে। এতে ঘটনাস্থলে পান্দব চাকমা নিহত হন। তবে অর্জন চাকমা পালিয়ে যান। নিহত পান্দব চাকমা বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নের রাঙা দুরছড়ি গ্রামের প্রফুল্ল চাকমার ছেলে।
আটরকছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বান্দরতলাছড়া গ্রামে এম এন লারমার এক কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গ্রামবাসী আমাকে জানিয়েছেন, লাশটি এখনো ঘটনাস্থলে পড়ে আছে। ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।’
এম এন লারমার লংগদু উপজেলা কমিটির সমন্বয়ক অলঙ্গ লাল চাকমা অভিযোগ করেন, ‘পান্দব চাকমা আমাদের সাবেক কর্মী। তিনি তিন বছর ধরে দলত্যাগ করেছেন। জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র কর্মীরা এসে গুলি করে হত্যা করেছে।’
জেএসএসের লংগদু উপজেলা শাখার সভাপতি মনি শংকর চাকমা বলেন, ‘বান্দরতলাছড়া গ্রামের খুনের ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।’
লংগদু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ নূর প্রথম আলোকে বলেন, বান্দরতলাছড়া গ্রামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার খবর শুনেছি। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ রওনা দিয়েছে। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় লাশ উদ্ধারে একটু দেরি হতে পারে।’