আলোচিত সিকদার গ্রুপের প্রধানের দুই পুত্র রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোম্পানি নিবন্ধন করে বিনিয়োগ করেছেন। অথচ বাংলাদেশে তাঁদের সেই তথ্য জানানোর কোনো বাধ্যবাধকতাই নেই। কারণ, তাঁরা দ্বৈত নাগরিক।
দ্বৈত নাগরিক ছাড়াও, কেবল বাংলাদেশের নাগরিক যাঁরা, বিদেশে সম্পদ থাকলে আয়কর বিবরণীতে তাও জানানোর কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। যেমন কুয়েতে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ শহিদ ইসলামের কোম্পানি রয়েছে। প্রতারণা ও মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক শহিদ ইসলাম আয়কর বিবরণী বা নির্বাচনী হলফনামার কোথাও তা উল্লেখ করেননি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সহজ যুক্তি হচ্ছে, যেহেতু বাংলাদেশের কোনো নাগরিক আইনত বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন না, তাই আয়কর বিবরণীতে এর জন্য কোনো জায়গা রাখা হয়নি। অথচ পাশের দেশ ভারত ও পাকিস্তানে এই ব্যবস্থা ঠিকই আছে। তারা এ থেকে করও পাচ্ছে।
বাংলাদেশে এই সুযোগ নিয়েই দেশ থেকে টাকা পাচার ও বিদেশের সম্পদ গড়ার কাজটিও অবাধে চালানো হচ্ছে। এর মধ্যেই আবার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে টাকা পা
চার করলে মৃদু জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) এম হাফিজউদ্দিন খান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা টাকা পাচার করেন, তাঁরা বেশ প্রভাবশালী। আইন তাঁদের স্পর্শ করতে পারে না। কানাডায় পাচার করা টাকায় ‘বেগমপাড়া’ হয়েছে। সেখানে তাঁদের স্ত্রী-সন্তানেরা বিলাসী জীবন যাপন করেন। অথচ কানাডায় তাঁদের কোনো আয় নেই। তাঁদের বিলাসী জীবনের টাকা কোথা থেকে আসে, এই প্রশ্নের উত্তর আমরা সবাই জানি। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তাঁর মতে, বিদেশে থাকা সম্পদ ও আয় এ দেশে দেখানোর উদ্যোগ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে আইন সংস্কার করা দরকার।
আয়কর বিবরণীতে যা থাকে
এনবিআরের কাছে বার্ষিক কর নথি জমা দেওয়ার সময় একজন করদাতাকে আয়কর, ব্যয় ও সম্পদ—এই তিন ধরনের তথ্য দিতে হয়। এর মধ্যে আয় বিবরণীতে কোন কোন খাত থেকে কত আয় হয়েছে, তা উল্লেখ করতে হয়। তফসিল ২৪সি ফরমের মাধ্যমে ব্যবসা বা পেশার আয় দেখাতে হয়। কিন্তু এই ফরমের কোথাও বিদেশে আয়ের তথ্য চাওয়া হয়নি। সম্পদ বিবরণীর নির্ধারিত ফরমেও বিদেশে সম্পদ আছে কি না, তা জানতে চেয়ে কোনো সারণি রাখা হয়নি।
বিশিষ্ট আইনজীবী তানজীব উল আলম এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, সম্পদ এবং আয় সমার্থক নয়। বর্তমানে প্রচলিত কর আইন অনুযায়ী শুধু দেশের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত আয়ের জন্য কর দিতে হয়, কিন্তু সম্পদ বিবরণী শুধু দেশীয় সম্পদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সমস্যা হচ্ছে, কেউ যদি সে সম্পদের বিবরণ গোপন করেন, তাহলে কী হবে। কারও অধিকারে যদি জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকে, তাহলে ১৯ ধারার অধীনে আয়কর নির্ধারণ করতে পারে কর কমিশনার। কিন্তু কার কত সম্পদ দেশের বাইরে আছে, সেটা জানার উপায় কী। এ ক্ষেত্রে করদাতা যদি ওই সম্পদ বিদেশে নিতে গিয়ে দেশের আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে সেটা মুদ্রা পাচার আইনে অপরাধ এবং সে সম্পদ বাজেয়াপ্তযোগ্য।
উদ্যোগ নিয়েও এগোয়নি এনবিআর
২০১৯ সালের শেষের দিকে এনবিআর বিদেশে থাকা সম্পদ ঘোষণার বিধানটি রেখে এ থেকে কর আদায়ের একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। এ জন্য কর বিভাগের একটি বিশেষ দল কাজ শুরু করে। তবে আইনি জটিলতা হবে—এই যুক্তিতে চূড়ান্ত সুপারিশমালা জমা দেয়নি ওই বিশেষ দল।
সে সময়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান ছিলেন মোশাররফ হোসেন ভূইয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশ থেকে যেহেতু বিদেশে বৈধ পথে বিনিয়োগের সুযোগ নেই, তাই আইনি কাঠামোর মধ্যে কর বিবরণীতে করদাতার বিদেশে থাকা সম্পদ দেখানোর সুযোগ রাখা হয় না। যখন ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তখন সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তারা আমাকে জানিয়েছেন, দ্বৈত নাগরিকেরা এ দেশে অর্জিত আয় কর নথিতে দেখান। আর বিদেশের বৈধ আয় ওই দেশের কর নথিতে দেখান। সম্পদের ক্ষেত্রেও একই চিত্র।’
তাঁর মতে, বিদেশে থাকা সম্পদ দেখানোর আরেকটি বড় সমস্যা হলো, অনেকেই বৈধ পথে টাকা নিয়ে সম্পদ বানাননি।
নাগরিকত্বের আড়ালে টাকা পাচার
এনবিআর পিছিয়ে এলেও পারিবারিক বা বিনিয়োগের সূত্র ধরে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বহু দেশে নাগরিকত্ব নিয়েছেন বা স্থায়ীভাবে বসবাস করেন বহু বাংলাদেশি। এর মধ্যে মালয়েশিয়ার ‘মাই সেকেন্ড হোম’ কর্মসূচির আওতায় বহু বাংলাদেশি ওই দেশে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ নিয়েছেন। মাই সেকেন্ড হোম কর্মসূচির ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৪ হাজার ১৩৫ জন বাংলাদেশি এই কর্মসূচিতে মালয়েশিয়ায় স্থায়ী হয়েছেন। চীন ও জাপানের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। এই কর্মসূচির আওতায় মালয়েশিয়ায় স্থায়ী হতে ৫ লাখ রিঙ্গিত ওই দেশের ব্যাংকে নগদ রাখতে হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১ কোটি টাকা। প্রতি মাসে ১০ হাজার রিঙ্গিত সমপরিমাণ আয় দেখাতে হয়।
>আয়কর নথিতে বিদেশে সম্পদ থাকার তথ্য জানাতে হয় না। উদ্যোগ নিয়েও পিছিয়ে আসে এনবিআর। ভারত ও পাকিস্তানে বিদেশে সম্পদ থাকলে জানাতে হয়।
একইভাবে কানাডায় বিনিয়োগ কর্মসূচির মাধ্যমেও স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নিয়েছেন অনেক বাংলাদেশি। আবার অনেক বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভিয়েতনাম, সাইপ্রাসসহ বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করেছে। আমদানি-রপ্তানির আড়ালে এবং হুন্ডিসহ নানা উপায়ে ওই দেশে টাকা পাচার করা হয়েছে। আমলাদের একটি বড় অংশও অবৈধ উপার্জিত অর্থ পাচার করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছে।
দেশে দেশে উদ্যোগ
দ্বৈত নাগরিকদের কর ফাঁকি ও টাকা পাচার নিয়ে বিপাকে থাকা অনেক দেশই বিদেশে থাকা সম্পদ জানা এবং কর আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে। সার্কভুক্ত দেশ ভারত ও পাকিস্তানের কর নথিতে আগে বিদেশি সম্পদ দেখানোর কোনো সুযোগ রাখা ছিল না। ২০১৯ সালে দুটি দেশই তাদের নাগরিকদের বিদেশে থাকা সম্পদ কর নথিতে দেখানোর বিশেষ সুযোগ দিয়েছে।
গত ২০১৯ সালের ১৬ মে বিশেষ অধ্যাদেশ দিয়ে পাকিস্তান তার নাগরিকদের নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে দেশে-বিদেশে থাকা অপ্রদর্শিত সম্পদ ঘোষণার সুযোগ দিয়েছে। বিদেশে থাকা সম্পদের ওপর ৪ শতাংশ এবং বিদেশে থাকা নগদ অর্থের ওপর ৬ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। সারচার্জসহ এই সুযোগের মেয়াদ ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত।
এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারতীয় নাগরিকদের বিদেশে থাকা সম্পদ তাঁদের কর নথির রিটার্নে দেখানোর সুযোগ দেয় ভারতের দ্য সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস (সিবিটিবি)। ভারতের নাগরিকদের বিদেশে সম্পদ বা আয় আছে কি না, তা জানতে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকেও গোয়েন্দা উদ্যোগ আছে। ওই সব দেশের দূতাবাসে প্রথম সচিবের মর্যাদায় একজন কর কর্মকর্তার নেতৃত্বে আছে ইনকাম ট্যাক্স ওভারসিজ ইউনিট (আইটিওইউ)। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মরিশাস, সাইপ্রাস—এসব দেশের ভারতীয় দূতাবাসে আইটিওইউ আছে।
আবার বিনিয়োগ করেও উন্নত দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। বৈধ-অবৈধ পথে ওই সব দেশে বিনিয়োগের অর্থ যায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে গোল্ডেন ভিসার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের নাগরিকত্ব বা স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়। শর্ত হচ্ছে, ওই দেশে আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হবে। ২০১৭ সালের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এভাবে নাগরিকত্ব দেওয়াকে নিরাপত্তায় ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছিল।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস) মার্কিন নাগরিকদের বিদেশে থাকা সম্পদ ঘোষণায় প্রায়ই সুযোগ দেয়। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ফরেন অ্যাকাউন্ট ট্যাক্স কমপ্লায়েন্ট অ্যাক্ট (এফএটিসিএ) নামে একটি আইন পাস করেছে। এর আওতায় বিশ্বের যেকোনো দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো মার্কিন নাগরিকের যদি ৫০ হাজার ডলারের বেশি অর্থ বা সম্পদ থাকে, তা জানতে চাইতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এই আইনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর গড়ে ৮০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বাড়তি কর পেয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, দ্বৈত নাগরিকদের দেশে-বিদেশে সম্পদের হিসাব কর নথিতে থাকা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য। এ দেশ থেকে অনেকেই টাকা পাচার করেছেন। অবৈধ উপায়ে একবার টাকা বিদেশে নিয়ে গেলে তা সেখানে রাখতেই বেশি নিরাপদ মনে করেন তাঁরা। আবার প্রভাবশালীদের অনেকের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। অবশ্য দ্বৈত নাগরিকত্ব না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে সম্পদ বানানো সম্ভব। এ দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে টাকার বান্ডিল নিয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার আপত্তি জানায় না। সেই টাকায় বাড়ি-গাড়ি কিনলেও কর বিভাগ জানতে চায় না তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক কি না, স্থায়ীভাবে বসবাস করেন কি না। শুধু ওই অর্থের ওপর কর দিলেই সম্পদ কেনা যায়।
টাকা পাচারে সরকারি উৎসাহ
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হলেও সরকার কিন্তু এবার এর শাস্তি কমিয়ে দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে পাচার করা অর্থের ওপর কেবল কর আরোপের কথা বলেছেন। বাজেট অনুযায়ী, লেনদেন করার সময় চালানে বেশি মূল্য দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) বা কম মূল্য দেখানোর (আন্ডার ইনভয়েসিং) মাধ্যমে অর্থ পাচার হলে সেই অর্থের ওপর ৫০ শতাংশ কর আরোপ করা হবে। এর মানে, আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে টাকা পাচার হলে এবং তা যদি ধরা পড়ে, তাহলে পাচার করা টাকার অর্ধেকের সমপরিমাণ টাকা দিলেই মাফ পাওয়া যাবে।
কিন্তু ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বলা হয়েছে, অর্থ পাচারকারীর শাস্তি ৪ বছর থেকে ১২ বছর। এ ছাড়া যে পরিমাণ সম্পদ পাচার হয়েছে, এর দ্বিগুণ পরিমাণ কিংবা ১০ লাখ টাকা—এর মধ্যে যেটি বেশি হবে তা জরিমানা করা হবে। আবার পাচারকৃত পুরো সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার বিধানও রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার কারণে এই আইন বাংলাদেশকে করতে হয়েছে। অথচ বাজেটে অর্থমন্ত্রী বললেন ভিন্ন কথা।
টাকা পাচার নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা লেনদেনের আড়ালে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। তাদের হিসাবে, বাংলাদেশ থেকে যত টাকা পাচার হয়, এর মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের মাধ্যমে হয়। এর বাইরে হুন্ডির মাধ্যমেও বিপুল অর্থ পাচার হয়।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সামগ্রিক বিষয় নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলেও নাগরিক একজনই। তাই ওই দ্বৈত নাগরিক দেশ ও দেশের বাইরে যে আয় ও সম্পদ অর্জন করেছেন, সে বিষয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায়িত্ব এনবিআরের। এনবিআরের সক্ষমতায় ঘাটতি থাকতে পারে। কিন্তু এই বিষয়ে এনবিআরের সদিচ্ছাও থাকতে হবে। কারণ, দ্বৈত নাগরিকত্ব নেওয়া করদাতা এ দেশে কিংবা ওই দেশে—কোনো জায়গায় অবৈধ সম্পদ অর্জন করতে পারবেন না। এ দেশ থেকে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন কি না; বৈধ সম্পদ অবৈধভাবে নিচ্ছেন কি না, তাও দেখতে হবে। তাই কর নথিতে বিদেশের সম্পদের বিবরণ থাকা উচিত।
অর্থ পাচার প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ৫০ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা অর্থ বৈধ করার সুযোগটি খুনের মামলার আসামিকে তিরস্কার করার মতো। এনবিআরের এ ধরনের সুযোগ দেওয়া অর্থ পাচারকে উৎসাহিত করবে। এভাবে ঢালাও সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।