নুসরাত হত্যা

যেভাবে আটক সন্দেহের কেন্দ্রে থাকা এক আসামি

আসামি নুর উদ্দীন
আসামি নুর উদ্দীন

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি নুর উদ্দিন। ৬ এপ্রিল রাফির শরীর আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরই নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যান তিনি। এলাকা ছেড়ে নুর চলে আসেন প্রায় আড়াই শ কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায়। শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত এই উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের আমতলী এলাকায় আকবর নামে পূর্বপরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন নুর। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আকবরের বাড়ি থেকে নুরকে আটক করা হয়।

নুর উদ্দিনকে যাঁরা আটক করেছেন তাঁরা নিজেদের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্য দাবি করলেও ময়মনসিংহ ও ঢাকায় সংস্থাটির কোনো কর্মকর্তাই আটকের কথা স্বীকার করেননি। তবে পিবিআইয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, নুর উদ্দিনকে তাঁরা আটক করে ফেনীতে নিয়ে গেছেন।

নুর উদ্দিন যেভাবে আটক হন, সেই বর্ণনা প্রথম আলোকে দেন আমতলীর স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।

গ্রেপ্তারের সময় আকবরের বাড়ির একটি কক্ষে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন নুর উদ্দিন। ঘুম থেকে ডেকে আটক করে তাঁকে বাইরে থাকা একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। তবে নুর উদ্দিনকে আটকের সময় আকবরকে তাঁর বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পর আকবর আর বাড়িতে ফেরেননি বলে জানান প্রতিবেশীরা।

আকবরের বাড়ির প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম জানান, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে অপরিচিত নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। ফোনে শফিকুলকে আমতলীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসতে বলা হয়। কিছু সময় পর সেখানে গিয়ে বেশ কয়েকজন লোক দেখতে পান তিনি। তাঁরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ শফিকুলের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই লোকেরা আকবর নামের এক ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য জানতে চান। তখন শফিকুল ইসলাম তাঁদের জানান, আকবর ভালুকায় শ্রমিকের কাজ করেন। এর পাশাপাশি পলিথিনের ব্যবসা করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার সোনাগাজীতে। সেখান থেকে ভালুকার আমতলী এলাকায় চার বছর আগে জমি কিনে টিন শেডের একতলা একটি বাড়ি করেন আকবর। সেই বাড়িতে চারটি কক্ষ রয়েছে। এলাকার কারখানার শ্রমিকদের কাছে কয়েকটি কক্ষ ভাড়া দিয়েছেন আকবর।

এসব তথ্য জেনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই অপরিচিত লোকেরা শফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে আকবরের বাড়িতে যান। বাড়ির দরজা ধাক্কা দেওয়ার পর ভেতর থেকে একজন সেটি খুলে দেন। ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, একটি কক্ষের খাটে ঘুমাচ্ছেন নুর উদ্দিন। ওই অবস্থায় তাঁকে আটক করা হয়। তখনই অপরিচিত লোকেরা নিজেদের পিবিআইয়ের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। পরে নুর উদ্দিনকে নিয়ে দুটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস আমতলী এলাকা ছেড়ে চলে যায়।

আকবরের বাড়িতে এক নারী জানান, সোনাগাজীতে আকবর ও নুর উদ্দিনের বাড়ি পাশাপাশি । সেই সূত্র ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের বেলা কোন একসময় আকবরের বাড়িতে আসেন নুর উদ্দিন। সেখানে এসে কিছুদিন থাকবেন বলে জানান নুর উদ্দিন।

আরও পড়ুন...