মোটরসাইকেল কিনতে ‘প্রেমিকাকে’ অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি

অপহরণ
প্রতীকী ছবি

অনেক দিন ধরে একটি মোটরসাইকেল কেনার পরিকল্পনা করছিলেন খন্দকার সাকিব সাদমান। কিন্তু প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড় করতে পারছিলেন না এই যুবক। একপর্যায়ে দুই বন্ধুর প্ররোচনায় টাকার জন্য নিজের ‘প্রেমিকাকে’ বাসা থেকে ডেকে নিয়ে অপহরণ করেন তিনি। মেয়েটির বাবার কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন সাদমান। পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে উদ্ধারের পর এই অপহরণ–কাণ্ডের বিস্তারিত জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা বিভাগ (ডিবি)।

গত ২৭ মার্চ রাজধানীর মুগদা এলাকায় এই অপহরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন ২৮ মার্চ মেয়েটির মামা বাদী হয়ে মুগদা থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।
মামলার দিনই ডিএমপির ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশ্যাল ক্রাইম বিভাগ মুগদার কাঠেরপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণকারী সাদমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশ্যাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আশরাফ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন বন্ধু মিলে মেয়েটিকে অপহরণের ফাঁদে ফেলেন। একটি মোটরসাইকেল কেনাসহ কিছু ধারের টাকা পরিশোধ করতে তাঁরা মেয়েটিকে অপহরণ করেন।’

আশরাফ উল্লাহ আরও বলেন, সাদমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই অপহরণ–কাণ্ডে জড়িত তাঁর দুই বন্ধুর নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সাদমান জিজ্ঞাসাবাদে ডিবিকে জানিয়েছেন, তিনি ‘এ’লেবেল পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। খারাপ বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে তিনি পড়ালেখা থেকে ঝরে পড়েছেন। একপর্যায়ে তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বন্ধুদের প্ররোচনাতেই তিনি অপহরণ–কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

ডিবি জানায়, মেয়েটিকে ফোন করে দেখা করতে বলেছিলেন সাদমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে মেয়েটি রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে বেরিয়ে তাঁর কথিত প্রেমিক সাদমানের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর সাদমান কৌশলে মেয়েটিকে রাজধানীর মুগদা কাঠেরপুল এলাকার একটি বাসায় নিয়ে জিম্মি করেন। পরে মেয়েটির মুঠোফোন নম্বর থেকে তাঁর বাবাকে কল দিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন সাদমান।

ডিবি আরও জানায়, মেয়েটির বাবাকে ফোন করে সাদমান বলেছিলেন, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। দাবি অনুযায়ী টাকা দিলে তাঁর মেয়েকে জীবিত ফেরত দেওয়ার হবে। টাকা না দিয়ে পুলিশকে জানালে মেয়েকে মেরে ফেলা হবে।
মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট ডিবির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সাদমানের বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা ছিল না। কিন্তু তাঁর দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে।