৩ আসামির জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন

আসামিদের জামিন মঞ্জুর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাদের স্বজনেরা। তাদের দাবি, মৃত কিশোরী জীবিত ফিরে এল। তাহলে তাঁরা কেন মিথ্যা মামলায় জেল খাটবে।

নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জে ‘মৃত’ কিশোরীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় তিন আসামি আগে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে আবেদন জানানো হয়। আদালত তা গ্রহণ করে নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।

এ ছাড়া একই আদালত দুই আসামি আবদুল্লাহ ও রকিবের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। আর ওই কিশোরীর কথিত স্বামী ইকবালের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

আসামিপক্ষের আইনজীবী রোকন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তিন আসামি আবদুল্লাহ, রকিব ও খলিল আদালতে তাদের দেওয়া জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন। আসামিরা আবেদনে উল্লেখ করেছেন যে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।

এদিকে আসামিদের জামিন মঞ্জুর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাদের স্বজনেরা। তাদের দাবি, মৃত কিশোরী জীবিত ফিরে এল। তাহলে তাঁরা কেন মিথ্যা মামলায় জেল খাটবে। পুলিশ নির্যাতন করে ক্রসফায়ারের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওই কিশোরীকে ‘অপহরণের পর হত্যার’ অভিযোগে তার বাবার করা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আজ আদালতে হাজির হননি। ২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার এ ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ওসি আসাদুজ্জামান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে শোকজ করে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছিল।

গত ৪ জুলাই ১৫ বছর বয়সী কিশোরী নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এই ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা হলে পুলিশ তিন আসামি আবদুল্লাহ, রকিব ও খলিলকে গ্রেপ্তার করে। ওই আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তাঁরা লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন। নিখোঁজের ৫১ দিন পর ওই কিশোরী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পরিবারের লোকজন তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।

এই ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপার পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। আর তিন আসামির পরিবারের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অভিযোগে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শামীমকে প্রত্যাহার করা হয়। থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবদুল হাইকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়।