পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপাড়া গ্রামে গতকাল শনিবার রাতে স্বামী তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত গৃহবধূর পরিবারের দাবি, স্বামী তাঁর মানিব্যাগে প্রেমিকার ছবি রেখেছিলেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় তিনি স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।
নিহত ওই গৃহবধূর নাম ঐশী খাতুন (২০)। তিনি আওতাপাড়া গ্রামের জাহিদ হোসেনের স্ত্রী। এই ঘটনায় ঐশীর মা বাদী হয়ে আজ রোববার জাহিদ ও তাঁর পরিবারের দুই সদস্যকে আসামি করে মামলা করেছেন।
স্থানীয় লোকজন ও মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঐশী উপজেলার চর আওতাপাড়া গ্রামের মাহবুল আলমের মেয়ে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে জাহিদের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ঐশীর পরিবার তিন লাখ টাকা যৌতুক দেয়। পরে আরও কিছু টাকা যৌতুক দাবি করেন জাহিদ। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়। এর মধ্যে জাহিদ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। নিজের মানিব্যাগে জাহিদ ওই নারীর ছবি রাখেন। এর প্রতিবাদ করেন ঐশী। এ নিয়ে দুদিন ধরে তাঁদের দাম্পত্য কলহ চরম আকার ধারণ করে।
ঐশীর মা শাহানারা বেগমের ভাষ্য, জাহিদের পরকীয়ার বিষয়টি ঐশী তাঁদের জানিয়েছিলেন। গতকাল বিকেলে ঐশীকে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেন জাহিদ। খবর পেয়ে ঐশীর মা মেয়েকে আনতে লোক পাঠান। কিন্তু তাঁকে আসতে দেওয়া হয়নি।
ঐশীর মায়ের অভিযোগ, গতকাল সন্ধ্যায় জাহিদ ঐশীকে পিটিয়ে হত্যার পর দড়িতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেন। ঐশীর পরিবারকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে তাঁরা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মেয়েকে অচেতন অবস্থায় পান। পরে তাঁকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঐশীর মা বলেন, ‘জাহিদ আমার মেয়েকে খুন করছে। আমি বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর মা বাদী হয়ে জাহিদ ও তাঁর পরিবারের দুই সদস্যকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামিরা পলাতক। তাঁদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।