মাছ চুরির অপবাদে নির্যাতনের শিকার ১০ বছরের সৌরভ মণ্ডল অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। সাত দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাগুরা গ্রামের।
এ ঘটনায় সৌরভের বাবা কার্তিক মণ্ডল বাদী হয়ে আজ শনিবার স্থানীয় দুই যুবক বেলাল মোল্লা ও ফারুক মাতুব্বরকে আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। সৌরভ দক্ষিণ মাগুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে কার্তিক মণ্ডলের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী উত্তর মাগুরা গ্রামের বেলাল মোল্লার (৩৫) বিরোধ চলে আসছিল। ১৫ ফেব্রুয়ারি সৌরভের বাবা–মা দক্ষিণ মাদ্রা গ্রামের জমিতে কাজে যান। এ সময় বসতঘরের পাশের ডোবায় মাছ ধরছিল উত্তর মাগুরা গ্রামের বেলাল মোল্লা (৩৫) ও তাঁর সহযোগী ফারুক মাতুব্বর (৩২)। পাড়ে বসে মাছ ধরা দেখছিল সৌরভ। একপর্যায়ে মাছ চুরির অপবাদ দিয়ে বেলাল ও ফারুক সৌরভকে নির্যাতন করে। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সৌরভ পুকুর পাড়ে মাছ ধরা দেখছিল। বিকেল চারটার দিকে বেলাল মোল্লা মাছ চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সৌরভের শ্বাসনালি চেপে ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘাড়ের হাড় ভেঙে দেন। একপর্যায়ে বেলাল ও তাঁর সহযোগী ফারুক সৌরভকে অমানবিক নির্যাতন করে লাথি দিয়ে ধানখেতের ড্রেনে ফেলে দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, বাচ্ছাটা মাছ ধরা দেখছিল। বড়রা মাছ ধরে চলে যায়। এ সময় বেলাল ও ফারুক শিশুটির প্যান্ট খুলে তল্লাশি করেন এবং শরীরে কাদা লাগিয়ে দেন। এতে সৌরভ বেলালকে গালাগাল করলে তাঁরা শিশুটিকে মারধর করে ড্রেনে ফেলে দেন। এতে সৌরভের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। পরে তার গায়ে ডিজেল ঢেলে দেন তাঁরা। গুরুতর অবস্থায় সাত দিন চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল শুক্রবার রাতে সে মারা যায়।